অদ্বৈত মল্লবর্মণের উপন্যাস ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। স্বপ্নের ছন্দে সে বয়ে যেত। বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটক একে চিত্ররূপ দিয়েছিলেন। তবে, তার কূলজোড়া জল, বুকভরা ঢেউ আর প্রাণভরা উচ্ছাস আজ আর নেই। নেই বড় বড় পালতোলা নৌকার মাঝি-মাল্লাদের কলধ্বনি।
মেঘনা থেকে উৎপত্তি হয়ে প্রায় ১শ ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ তিতাস নদী জেলার প্রায় সব উপজেলা স্পর্শ করে আবার মেঘনায় গিয়ে পতিত হয়েছে।
স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের ব্যক্তিরা জানান, তিতাস রক্ষার্থে আমারা বিভিন্ন সময় মানববন্ধন করেছি, প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু তবুও এই নদীকে দখল ও দূষণ মুক্ত করে তিতাসের নব্যতা ফিরে আনতে পারছিনা।
দখল ও দূষণ মুক্ত করার জন্য জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদ যেসব উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেছেন। এ পর্যন্ত এসব কোন কার্যক্রম আমাদের চোখে পড়েনি। আজ তিতাস একটি ঐতিহ্যবাহী নদী হয়েও দূষণ ও দখলবাজদের কবলে পড়ে অবহেলিত হয়ে আছে।
দুঃখের বিষয় হলেও সত্য এই তিতাসের পাড়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যার বর্জ্য এই নদীতেই ফেলা হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় করছে। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানে বর্জ্য নদীকে দূষণ করছে। নদীকে দূষণ মুক্ত করার কোন রক্ষণাবেক্ষণই নিচ্ছে না পৌরসভা। এ নিয়ে আমরা কথাও বলেছি এবং আমাদের সকলকে এ বিষয়ে কথা বলা উচিত। আমাদের সকলের দাবি যে তিতাস দিয়ে একদিন লঞ্চে করে যাতায়াত হত, বড় বড় নৌকায় পাল উড়িয়ে দাড় টেনে মালমাল আমদানি রফতানি করা হত। নদী নব্যতায় প্রকৃতির নিয়মে নদীর বহমান থাকত।
নদী প্রবাহের প্রায় সব এলাকায়ই নদীর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরেরর মেড্ডা থেকে কাঞ্চনপুর পর্যন্ত নদী সবচেয়ে বেশী দখল আর দুষণে জর্জরিত। এককালের খর্বতা তিতাস নদী এখন শীর্ণ খাল। দখলে-দূষণে হারিয়ে যাচ্ছে তার স্রোত ধারা। দ্রুত দখল-দুষণকারীদের হাত থেকে ঐতিহ্যবাহী তিতাস নদী রক্ষার দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রায় ১শ ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১শ ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ নদী খননের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে সাধারণ মানুষের।
জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেছেন, দখল-দূষণকারীদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শিগগির তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বিবার্তা/আকঞ্জি/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]