
দরিদ্র শিল্পী খাতুন অন্যের বাসায় গৃহ পরিচালিকার কাজ করেও স্বপ্ন দেখেছিলেন ছেলে রিপন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করবে। তাইতো সুদে টাকা ঋণ করে প্রধান শিক্ষকের হাতেপায়ে ধরে ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েছিলেন। তবে শিক্ষকের ভুলে নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো সেই স্বপ্ন, দেওয়া হলো না পরীক্ষা।
ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মেঘনা হাই স্কুলের এসএসসি-২০২৪ পরীক্ষার্থী রিপন শেখ এর সাথে। সে মেঘনা গ্রামের দিনমজুর অলিল ও শিল্পী দম্পত্তির ছেলে।
প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবিতে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে পরীক্ষার্থী রিপনের মা শিল্পী খাতুন।
অভিযোগে বলা হয়, এসএসসির টেস্ট পরীক্ষায় রিপন তিন বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। যে কারণে তাকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য ওই স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস চার হাজার টাকা দাবি করেন। তবে মা শিল্পী খাতুন সুদে টাকা ঋণ করে প্রধান শিক্ষকের হাতেপায়ে ধরে ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে আসেন।
যথারীতি এস এস সি পরীক্ষা শুরুর আগের দিন (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিদ্যালয় থেকে অন্য সকল পরীক্ষার্থীকে প্রবেশপত্র দেওয়া হলেও রিপনকে দেওয়া হয়নি। সেখান থেকে প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুসের কাছে গিয়ে প্রবেশপত্র চাইলে তিনি জানান তোর ফরম ফিলাপের টাকা জমা দেওয়ার কথা মনে নেই আমার।
রিপনের মা শিল্পী খাতুন জানান, কাঁদতে কাঁদতে রিপন স্কুল থেকে বাড়িতে আসলে বিষয়টি শুনে তিনি ছুটে যান প্রধান শিক্ষকের কাছে। তবে প্রধান শিক্ষক তাকে দেখেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং পাগল-ছাগল বলে স্কুল থেকে বের করে দেন। বর্তমানে তার ছেলে রিপন নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে এবং আত্মহত্যাসহ দূরে কোথাও চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুসের সাথে পরীক্ষার্থীর প্রবেশপথ না পাওয়ার বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ঢাকা আছি। আমার নামে লিখত অভিযোগ দিয়েছে ওই ছাত্রের মা।ইউএনও যা করার করবে। এখানে সাংবাদিকের কাজ কী!
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও আমার উপর তদন্তের ভার দিয়েছে। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ২টায় তদন্তের স্বার্থে মেঘনা হাই স্কুলে সবাইকে থাকতে বলা হয়েছে। তদন্ত শেষে দোষী সাব্যস্ত হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিবার্তা/মিঠুন/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]