আশুগঞ্জে আমন ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধনের নামে ফটোসেশন
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:৩২
আশুগঞ্জে আমন ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধনের নামে ফটোসেশন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে অভ্যন্তরীণ আমন ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত কোন মিল মালিক চুক্তি করেনি জেলা খাদ্য বিভাগের সাথে। অথচ উদ্বোধনের নামে ফটোসেশন করা হয়েছে। ফলে এই উদ্বোধন নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানান, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোলাইমান মিয়া তড়িঘড়ি করে এই উদ্বোধন করেছেন। যদিও জেলা খাদ্য বিভাগ বলছেন এখন পর্যন্ত মাত্র তিনটি মিল চুক্তির আবেদন জমা দিয়েছেন। তবে তাদের এখনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, চুক্তি ছাড়া কোনো মিলের চাল গুদামে প্রবেশ করতে পারবে না।


জানা যায়, সরকারি চাল সংগ্রহ অভিযানে এখন পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মিল মালিকদের কাছ থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। সরকারি গুদামে চাল সরবরাহের জন্য কোনো মিল মালিকই এখনও চুক্তি করেনি। আগামী ৫ ডিসেম্বর চুক্তি করার শেষ দিন। ২৩ নভেম্বর থেকে খাদ্য গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। শেষ হবে আগামী বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি।


জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস জানান, এখন পর্যন্ত আশুগঞ্জে তিনটি মিল চুক্তি আবেদন করেছেন। তারা হলেন খান, একতা ও রজনীগন্ধা। তবে তাদের নামে এখনও কোনো অফিসিয়াল অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তাদের আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে।


এদিকে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বাজারে বেশিতে বিক্রি হচ্ছে ধান-চাল। এই কারণে মিল মালিকরা সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।


জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলার আশুগঞ্জ খাদ্য গুদামে সরকার ১৫ হাজার ৫৭৮ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, ১১ হাজার ২৪৫ মেট্রিক টন আতব চাল ও ১৩৪ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। সরকারিভাবে প্রতি কেজি সিদ্ধ চালের ক্রয় মূল্য ৪৪ টাকা, আতব চালের ক্রয় মূল্য ৪৩ টাকা ও ৩০ টাকা মূল্যে নির্ধারণ করা হয়েছে।


২ ডিসেম্বর, শনিবার দুপুরে আশুগঞ্জ খাদ্য গোডাউন চত্বরে ধান চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করেন আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হানিফ মুন্সী। অনুষ্ঠানে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্যামল চন্দ্র বসাকের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক চিন্তামনি তালুকদার প্রমুখ।


এদিকে কোন মিলমালিক চুক্তি না করে ফটোসেশন হিসাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আশুগঞ্জে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানটি এবার উদ্বোধন করা হয়েছে। কোনো রকম প্রস্তুতি ছাড়াই খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোলাইমান মিয়া এই উদ্বোধন করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মিল মালিক জানান, আমরা মিল মালিকরা এখনও চুক্তি করিনি। কেননা বাজার মূল্যের সাথে সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্যের কোন মিল নাই।


তারা আরও জানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোলাইমান মিয়া নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখার জন্য সংগ্রহ অভিযানের নামে এই ফটোসেশনের আয়োজন করেছেন।


আশুগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোলাইমান মিয়া জানান, মিল মালিকরা চুক্তি করেছে। তবে কোন মিল চুক্তি করেছে, তার তথ্য তিনি দিতে পারেনি। এই সময় ফটোসেশন কিনা জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।


এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্যামল চন্দ্র বসাক জানান, চুক্তি ছাড়া কোন মিলের চাল গুদামে প্রবেশ করতে পারবে না। তবে কিছুক্ষণ আগে আমার সাথে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কথা হয়েছে, অফিসিয়াল অর্ডার এখনও হয়নি। তিনি অর্ডার করার পর এসব চাল গুদামে যাবে।


বিবার্তা/নিয়ামুল/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com