
পর্যটন শহর কক্সবাজারে রেল চালু হওয়াকে কেন্দ্র করে হঠাৎ করে ইজিবাইকের ভাড়া বাড়িয়ে দ্বিগুণ করেছে। আর এই সুযোগে চালকেরা পর্যটক ও স্থানীয় যাত্রীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন ভাড়ার দ্বিগুণ টাকা। এর ফলে চালকদের সঙ্গে যাত্রীদের সাথে ঘটছে হাতাহাতি।
জানা গেছে, পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যানবাহন চালকদের জন্য স্মার্ট ডাটাবেস ‘কক্স-ক্যাব’ চালু করে ট্রাফিক পুলিশ। সেখানে শহরের বিভিন্ন স্থানের উঠা নামার ভাড়া নির্ধারণ করে দেয় তারা।
কক্সবাজার শহরতলীর বাসটার্মিনাল থেকে কলাতলী বা বাজারঘাটা পর্যন্ত ভাড়া ছিল ১০ টাকা। আর লিংকরোড থেকে অনির্ধারিত ভাড়া ছিল ২০ টাকা। কিন্তু ১ ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজারে রেল চালু হওয়ায় সে ভাড়া এখন বর্তমানে ভাড়া বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫০ টাকা। হঠাৎ রাতারাতি ইজিবাইক ভাড়া দ্বিগুণ করায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় ও পর্যটকরা।
স্থানীয়রা বলছেন, কক্সবাজারে রেল চালু হওয়ার আগে ভাড়া ছিল ১০/১৫/২০ টাকা। কিন্তু ইজি বাইক মালিক, ড্রাইভার এবং গ্যারেজ মালিকরা রেল আসার সুযোগকে পুঁজি করে এক লাফে ৫০ টাকা ভাড়া বৃদ্ধি করেছে।
কক্সবাজার শহরের সকল স্থানের অটো বা ইজিবাইকের বাড়তি ভাড়ায় অটো রিক্সার যাত্রীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অটোরিক্সা চালকদের হঠাৎ এরকম সিদ্ধান্তে বিপাকে পরেছেন অটো রিক্সার সাধারণ যাত্রীসহ হাজার হাজার পর্যটক।
২ ডিসেম্বর, শনিবার বিকেলে কলাতলীর কয়েকজন যাত্রী বলেন, একদিনের ব্যবধানে কোনো কারণ ছাড়া ২০ টাকার ভাড়া দ্বিগুণের বেশি করে ৫০ টাকা নিচ্ছে। আমি কারণ জানতে চাইলে চালক আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন।
ভাড়া নৈরাজ্য নিয়ে এদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। মো. আবদুল্লাহ লিখেছেন ‘রেল চালু হওয়ার সাথে সাথে, জুলুমিও চালু হলো। রেলষ্টেশন থেকে কলাতলীর মোড় ৫০ টাকা ভাড়া যারা নির্ধারণ করেছে, তারা কক্সবাজারের শত্রু। সর্বোচ্চ ২০ টাকা হতে পারে। এদের প্রতিহত করুন। এরা পর্যটন বিরোধী।’
বুলবুল তালুকদার লিখেছেন ‘রেলস্টেশন থেকে কলাতলী প্রতিজন টমটম ভাড়া ৫০ টাকা হলে, লিংকরোড থেকে কলাতলীর ভাড়া কত দিতে হবে স্থানীয়দের?
এ ব্যাপারে কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি অঅবু তাহের জানান, যাত্রী ভাড়া নির্ধারণ ট্যুরিস্ট পুলিশ বা ট্রাফিক পুলিশের কাজ নয়। এই কাজের জন্য একটি কমিটি আছে।
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী জানান, পৌর এলাকায় ইজিবাইক-সহ অন্যান্য পরিবহনের ভাড়া নির্ধারণ করা আছে। কেউ এরচেয়ে বেশি আদায় করলে পৌর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির কেন্দ্রীয় মহাসচিব মো. মোজাম্মেল জানান, কক্সবাজারে রেল আসা নিয়ে ইজিবাইক চালকরা শিডিউল মোতাবেক ভাড়ার দ্বিগুণ টাকা নিচ্ছে পর্যটক এবং স্থানীয় যাত্রীদের কাছ থেকে। যা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার কাছে দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে সরকার ঘোষিত নিবন্ধন ছাড়া ইজিবাইক চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ হলেও কক্সবাজার শহরতলি ও কলাতলী এলাকায় নিবন্ধন ছাড়া চলছে হাজার হাজার ইজিবাইক। যে কারণে প্রতিনিয়ত বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। শহরজুড়ে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলছে ইজিবাইক। অধিকাংশ চালকদের নেই কোনো অভিজ্ঞতা। ফলে যেখানে সেখানে দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ইজিবাইক চালিয়ে যাচ্ছে তারা । আর অতিরিক্ত ভাড়া বাড়ানোর কারণে যাত্রীদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত ঘটছে হাতাহাতি-মারামারি।
বিবার্তা/ফরহাদ/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]