
খাগড়াছড়ির আট মাইল থেকে অপহৃত মো. শফিকুল ইসলাম রাসেল (২৭) কে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অক্ষত উদ্ধার করা না গেলে তিন পার্বত্য জেলায় মানববন্ধন করার ঘোষণা দিয়ে পাঁচ ডিসেম্বরের পর পাহাড়ে অসহযোগ আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবুর রহমান।
২৫ নভেম্বর, শনিবার দুপুরে সংগঠনটি রাসেলের মুক্তির দাবিতে ডাকা বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশ থেকে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের মুক্ত মঞ্চে এ ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মো: মজিবুর রহমান বলেন, পাহাড়ে এখনো বারুদের গন্ধ ঘুরে বেড়ায়। পার্বত্য চট্টগ্রামের আনাচে-কানাচে নদীগুলোতে বাঙালিদের পঁচা লাশ মেলে জানিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের কান্না দেখার মত কেউ নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। এ সময় তিনি পার্বত্য জেলাকে মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, নেতৃত্ব,কর্তৃত্ব বাঙালিদের হাতে নাই মন্তব্য করে পাহাড়ে এক চেটিয়া পাহাড়িদের এমপি,মন্ত্রী, চেয়ারম্যানসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে বাঙালিদের বঞ্চিত করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা আহবায়ক অধ্যক্ষ আবু তাহের এর সভাপতিত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)র কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহাদাৎ হোসেন কায়েস এর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির মহাসচিব মো. আলমগীর কবির।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে পিসিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মজিদ, খাগড়াছড়ি জেলা সদস্য সচিব এস এম মাসুম রানা, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মো. নজরুল ইসলাম মাসুদ, দীঘিনালা উপজেলা সভাপতি মো. জাহিদ হাসান, পিসিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি সুমন আহমেদ, পিসিএমপি কেন্দ্রীয় সভানেত্রী সালমা আহমেদ মৌ, পিসিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদি হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহেল রানা, পিসিএমপি খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি হাসিনা আক্তার অংশ নেন।
এ ঘটনার প্রায় ১৬ দিন অতিবাহিত হলেও রাসেলকে জীবিত উদ্ধার করতে না পরায় খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে চলতি মাসের আগামী ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানসহ সকল ইউনিট হতে মানববন্ধন কর্মসূচি এবং আগামী ২ ডিসেম্বর শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন এবং আগামী ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সমাবেশ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেয়ার কথা জানান,পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবুর রহমান।
চলতি মাসের ৯ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর তাকে খাগড়াছড়ির আট মাইল রুচি চন্দ্র কারবারীপাড়া এলাকা থেকে অপহরণকারীরা তাকে অপহরণ করে দিয়ে যায় বলে সূত্র জানায়। পরে দাবিকৃত মুক্তিপণ নেওয়ার পরও রাসেলকে ফিরিয়ে না দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় তারা।
এ ঘটনায় ২৩ নভেম্বর পুলিশ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ তিনজনকে আটক করে। আটককৃতদের দুজনকে চট্টগ্রাম থেকে ও অপর একজনকে দীঘিনালা থেকে অভিযান চালিয়ে পুলিশ আটক করে বলে জানান খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
আটককৃত, মিঞ ধন চাকমা ওরফে সুজন (২৭) তার স্ত্রী সন্ধ্যা চাকমা মৌসমী (২৪) ও ধনঞ্জয় চাকমা (৫৫)কে বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ড চাইলে আদালত তাদের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এ ঘটনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ নিখোঁজ রাসেলকে উদ্ধারে কাজ করছে বলে জানান খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
অপহৃত রাসেল খাগড়াছড়ির কল্যাণপুরের বাসিন্দা মো. বাচ্চু মিয়ার ছেলে। সে পেশায় একজন ক্ষুদ্র কাঠ ব্যবসায়ী।
বিবার্তা/আল-মামুন/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]