বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির দুই সহোদরের সৃজিত বাগানের বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫ হাজার গাছ উপড়ে ও কেটে বিনষ্ট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি বনপুর রাজাপাড়া এলাকায়।
ক্ষতিগ্রস্ত ছাগ্য মার্মা ১৫ নভেম্বর, বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, জায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ মোহাম্মদ হোসেন মামুনরা এ কাজটি করেছেন। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রতিপক্ষ কর্তৃক জায়গা জবর দখল চেষ্টার হাত থেকে রক্ষা ও গাছ উপড়ে বিনষ্ট করার প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন ক্ষতিগ্রস্ত দুই সহোদর।
অভিযোগে জানা যায়, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বনপুর রাজা পাড়ার অংক্যহ্লা মার্মা ও ছাগ্য মার্মার নামের দুই সহোদরের ২৮৫নং সাঙ্গু মৌজায় মোট ১০ একর পাহাড়ি জায়গা রয়েছে। মৌজা হেডম্যান রিপোর্ট পাওয়ার পর তারা গত ২০ বছর ধরে ওই জায়গায় জুম চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির গাছের বাগান সৃজন সহ জুম ঘর নির্মাণ করে ভোগ করে আসছেন। এ ধারাবাহিকতায় গত তিন বছর আগে দুই সহদোরের অর্থায়নে এ জায়গাতে প্রায় ১৫ হাজার হাইব্রিড প্রজাতির ম্যালেরিয়া, সেগুন ও আকাশমনি গাছের চারা রোপন করা হয়।
কিন্তু গত ১০ নভেম্বর প্রতিপক্ষের মোহাম্মদ হোসেন মামুন ও তার লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে ওই বাগানে ৫ হাজার গাছের চারা কেটে ও উপড়ে ফেলে। শুধু তায় নয়, এ সময় জায়গার উপর নির্মিত জুমঘরটিও ভেঙ্গে দেয় তারা। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয় বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ছাগ্য মার্মা।
তিনি জানান, সম্প্রতি আমার ভোগদখলীয় জায়গা প্রতিপক্ষ মোহাম্মদ হোসেন মামুনরা দাবি করে আদালতে মামলাও করেছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ২৮৫নং সাঙ্গু মৌজা হেডম্যান চম্পট মুরুং জানান, অংক্যহ্লা মার্মা ও ছাগ্য মার্মার সৃজিত বাগানের গাছ উপড়ে ও কেটে ফেলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। এ সময় দেখা যায় প্রতিপক্ষের লোকজন দুই সহোদরের সৃজিত বাগানের ৫হাজার গাছ উপড়ে ও কেটে দিয়েছে। ঘটনাটি খুবই দু:খ জনক। প্রতিপক্ষ মোহাম্মদ হোসেন মামুনরা ২৮৪নং ইয়াংছা মৌজার একটি কাগজ দেখিয়ে সাঙ্গু মৌজার অংক্যহ্লা মার্মা ও ছাগ্য মার্মার জায়গা নিয়ে অযথা বিরোধ করছে বলেও দাবি করেন হেডম্যান চম্পট মুরুং।
এদিকে, সব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত মোহাম্মদ হোসেন মামুন বলেন, বন্দোবস্তি মূলে ওই জায়গা আমাাদের। তবে গাছের চারা আমরা নষ্ট করিনি। এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা। আমাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। মূলত আমাদেরকে ফাঁসাতে এ চক্রান্ত।
এ বিষয়ে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামীম শেখ বলেন, অংক্যহ্লা মার্মা ও ছাগ্য মার্মার সৃজিত বাগানের গাছ কেটে ও উপড়ে ফেলার ঘটনায় কেউ অভিযাগ করেনি। ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিবার্তা/আরমান/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]