লক্ষ্মীপুরে স্কুলছাত্রকে গুলি করে হত্যা: ৬ আসামির যাবজ্জীবন
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:৫৭
লক্ষ্মীপুরে স্কুলছাত্রকে গুলি করে হত্যা: ৬ আসামির যাবজ্জীবন
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে মো. রবিউল আউয়াল শিমুল (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ছয় আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। এদের প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।


৯ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।


দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে মাসুদুর রহমান ওরফে কালা মাসুদ (৩২), দিঘলী ইউনিয়নের উত্তর জামিরতলী গ্রামের নুর মোহাম্মদ লিটন (৩৮), গোবিন্দখিল গ্রামের মৃত ওমর ফারুকের ছেলে শাহরিয়ার রাশেদ ওরফে লন্ডনী রাশেদ (৩৩), চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের দেওপাড়া গ্রামের মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে ইলিয়াছ (৩৫), পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের বেলালের ছেলে সাদ্দাম (৩১) ও একই এলাকার পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন সাদ্দাম ওরফে বিড়ি সাদ্দাম (৩১)। এরা সকলে সন্ত্রাসী জিসান বাহিনীর সক্রিয় সদস্য ছিল।


অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় আদালত থেকে এ মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম (৩১)।


জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ছয় আসামির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ইলিয়াস আদালতে উপস্থিত ছিল। তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বাকী আসামিরা পলাতক রয়েছে।


ভিকটিম রবিউল চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও থানা সেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশীদ বাবলুর ভাগিনা। মামার সাথে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে ভাগিনাকে হত্যা করা হয়েছে।


মামলার এজাহার সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বন্দুকধারী সন্ত্রাসীরা রবিউল আউয়াল শিমুলকে তার নানার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে চন্দ্রগঞ্জের দেওপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের পাশে গুলি করে হত্যা করে লাশ ফেলে যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় রবিউলের মামা কাজী মামুনুর রশিদ বাবলু বাদি হয়ে ৫ মে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।


আদালত সূত্রে জানা গেছে, হত্যা মামলাটি প্রথমে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করে ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দেয়। এতে চার জনকে অভিযুক্ত করা হয়। পরে তদন্ত প্রতিবেদনে অসন্তুষ্ট হয়ে আলাদতে নারাজি দেয় বাদি। এর পর মামলাটি নোয়াখালী পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে। তদন্তে ৭ জন আসামিকে অভিযুক্ত করে ২০২০ সালের ৪ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন পিবিআই নোয়াখালীর সে সময়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. আনোয়ার উল ইসলাম৷


তদন্তে উল্লেখ করা হয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কাজী মামুনুর রশিদ বাবলুর সাথে চন্দ্রগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও র‍্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত যুবদল নেতা জিসানের সাথে বিরোধ ছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে ঘটনার রাতে জিসান বাহিনীর নেতৃত্বে অভিযুক্ত আসামিরা বাবলুর বাড়িতে সশস্ত্র হয়ে হানা দেয়। এসময় রবিউল তার মা পেয়ারা বেগমের সাথে নানার ঘরে বসে নাস্তা করছিলেন। সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি টের পেয়ে রবিউল দৌড়ে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করলে তাকে তুলে নিয়ে যায় অস্ত্রধারীরা। পরে পিঠের মেরুদণ্ডে গুলি করে হত্যা করে মৃতদেহ ফেলে রেখে যায়।


বিবার্তা/সুমন/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com