
চির চেনা রূপে নেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খরস্রোতা তিতাস নদী। কয়েক দশকের দখল-দূষণে নদীটি এখন প্রায় মৃত। গভীর খনন না হওয়ায় দিন দিন সংকুচিত হয়ে এর নাব্যতা হারিয়েছে। এতে নৌরুটে স্বাভাবিক নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সে সাথে দূষণের ফলে তিতাসের স্বচ্ছ জলরাশি এখন ঘুটঘুটে কালো। স্থানীয়দের দাবি নদীটিকে রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের তৎপর ভূমিকা রাখতে হবে।
নদীর সীমানা দখল করে গড়ে উঠা ভবনটি সাক্ষ্য দিচ্ছে, তিতাসের বুকে ভূমি দস্যুদের থাবা কতটা নির্মম। ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রাচীন এই নদীর বিভিন্ন অংশেই রয়েছে এমন দখলের চিত্র।
তিতাস নদীকে নিয়ে অদ্বৈত মল্লবর্মণ রচনা করেছিলেন বাংলা সাহিত্যের অমর সৃষ্টি ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। তবে সেই তিতাসের বিশালতা এখন আর নেই।
ক্রমাগত দখল-দূষণে নদীটি এখন অস্তিত্ব সংকটে। নদীর সীমানা দখল করে গড়ে উঠছে বিভিন্ন দোকানপাটসহ বহুতল ভবন ও মার্কেট।
নদী কমিশনের তথ্য অনুযায়ী শতাধিক অবৈধ দখলদার তিতাস নদীকে গিলে খেয়েছে নানাভাবে। এতে করে নদীর বিভিন্ন অংশ ভরাট হয়ে সংকুচিত হয়ে আসছে। সে সাথে নাব্যতা না থাকায় নৌরুটে স্বাভাবিক নৌ চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয়রা মনে করেন, দখল উচ্ছেদসহ কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে
কালের সাক্ষীই হয়ে থাকবে ঐতিহ্যবাহী এই নদীটি।
এদিকে শহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়িসহ হাট-বাজারের বর্জ্য নির্বিচারে ফেলা হচ্ছে নদীর পাড়ে। পাশাপাশি বিভিন্ন ড্রেনেজের দূষিত পানিও ফেলা হয় নদীতে।
এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি নদীর স্বচ্ছ জলরাশি ঘুটঘুটে কালো পানিতে পরিণত হচ্ছে। মিঠা পানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় দেশীয় মাছের যোগানও কমছে।
দখলদারদের তালিকা হলেও উচ্ছেদে সংশ্লিষ্টদের জোড়ালো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক সংগঠন-তরী বাংলাদেশ এর আহ্বায়ক শামীম আহমেদের।
ভরাট হতে থাকা তিতাসে ধারাবাহিক খনন প্রক্রিয়া প্রয়োজন জানিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান বলেন, সম্প্রতি সেচ উপযোগী গভীরতায় নদী খনন প্রকল্প কাজ শেষে হয়েছে।
মামলা জটিলতায় নদীর সীমানা উদ্ধার অভিযান বন্ধ রয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মামলা নিষ্পত্তি হলেই চালানো হবে জোড়ালো অভিযান।
অদ্বৈত মল্ল বর্মণের অমর সেই উপন্যাসের ভরা তিতাস- যার কূল জোড়ে জল আর বুকভরা ঢেউ আবারো ফিরে আসবে এমন প্রত্যাশা সকলের।
বিবার্তা/নিয়ামুল/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]