বালিয়াকান্দিতে ইট ভাটায় শ্রমিক পেটানোর অভিযোগ
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৪৪
বালিয়াকান্দিতে ইট ভাটায় শ্রমিক পেটানোর অভিযোগ
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে বিতর্কিত আর এন্ড বি ইটের ভাটার মালিকের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের মারপিট করে আটকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। আহত শ্রমিকদের স্থানীয় চেয়ারম্যান উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।


রবিবার (৫ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বারোমল্লিকা এলাকার রামদিয়া-গান্ধিমারা সড়কের পাশে অবস্থিত আর এন্ড বি ইটের ভাটায় এ ঘটনা ঘটে।


নির্যাতনের শিকার শ্রমিকরা হলেন- সাতক্ষীরা জেলা শ্যামনগর উপজেলার মৃত আব্দুর রহিম গাজীর ছেলে শহীদুল ইসলাম (৪৬), মেহের আলীর ছেলে জহির আলম (৩২), ভীতু আজাদুর রহমানের ছেলে আব্দুর রহমান (৪২), মৃত রফিজ উদ্দিন মোড়লের ছেলে আবু জাফর (২২) ও আব্দুর রহমান আলীর ছেলে আবজাল হোসেন (২২)।


ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ইট তৈরির জন্য সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার থেকে ৩০/৪০ জন শ্রমিক ইসলামপুর ইউনিয়নের আর এন্ড বি ইটের ভাটায় চুক্তিতে আসেন। তবে সময় মতো মাটি না দেওয়া আর ইটের সাইজ নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে মালিক পক্ষের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। শ্রমিকরা কাজ না করে ফিরে যেতে চাইলে মালিক পক্ষ কাঠের বাটাম ও হাতুড়ি দিয়ে মারপিট করে আটকিয়ে রাখে।পরে ইসলামপুর ও মদাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহতদের উদ্ধার করে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠান।


শ্রমিকদের সরদার শহিদুল ইসলাম বলেন, মালিকদের ৫ দিন আগেই বলেছি ভাই সময় মতো আপনারা মাটি দেন না। এছাড়াও যে সকল সুযোগ সুবিধার কথা বলে নিয়ে আসছেন সেগুলো না দেওয়ায় শ্রমিকরা কাজ করতে চাইছে না। আজ দুপুরে এ কথা আবার মালিকদের কাছে বলতেই নাসির, নজরুল, রফিক ও সোহেল আমাকে মারপিট করেতে থাকে। এসময় আমার শ্রমিকরা এগিয়ে আসলে তাদেরও মারপিট করা হয়। এতে আমিসহ ৫ জন আহত হই। পুরো সিজেন কাজ করার মর্মে ১ লাখ টাকা মালিক পক্ষকে আমার অগ্রিম দিতে হয়েছে। এছাড়াও ৭০ হাজার ইট কারার টাকা পাওনা রয়েছে। তারা আমার বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকার মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়েছে। আমরা যাতে ভাটার বাইরে বেড় হতে না পারি সেই জন্য আমাদের আটকে রাখা হয়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান এসে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।


ইটের ভাটার মালিক মো: নাসির বলেন, আমার ইটের ভাটার বিরুদ্ধে গত বছর স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ষড়যন্ত্র করেছিলো। তারা এ বছর ভাটা চালু হওয়ার সাথে সাথে শ্রমিকদের সাথে আঁতাত করে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। দুইটি মিলের জন্য ১৬ লক্ষ টাকা অগ্রিম দিয়ে সাতক্ষীরা থেকে শ্রমিক এনেছি। শ্রমিকরা স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের উস্কানিতে ইটার সাইজ বড় বলে অভিযোগ তুলেছে। ইটের নির্দিষ্ট একটা সাইজ থাকে, সেই সাইজ অনুযায়ী ইট কাটতে হয়। তা না হলে প্রশাসন জরিমানা করে। যারা উষ্কানি দিচ্ছে তারা ভালো করেই জানে এখন শ্রমিকদের তাড়াতে পারলে নতুন করে আর শ্রমিক পাওয়া যাবে না। ইটের ভাটা বন্ধ রাখতে হবে!


তিনি আরও বলেন, আজকের ঘটনার সময় ইটের ভাটায় ছিলাম না। সারাদিন প্রশাসনের সাথে ইটের ভাটার মালিকদের মিটিং ছিলো। এসে জানতে পারি আমার ভাই শ্রমিকদের কাজ করতে বললে তারা আমার ভাইকে মারতে আসে। এসময় তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সবাই আবার কাজ শুরু করে। কিন্তু সন্ধ্যার সময় চেয়ারম্যান এসে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।


ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহমদ আলী বলেন, আমার কাছে অপরিচিত একটা নাম্বার থেকে ফোন আসে। তার বিস্তারিত বললে আমি ও মদাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গিয়ে নাসিরের ইটের ভাটার ২ নং সেড থেকে আহতদের উদ্ধার করে হসপিটালে পাঠাই।অন্যরা সেখানে নিরাপদ মনে না করায় মদাপুর ইউনিয়ন পরিষদে রাতে থাকার জন্য পাঠানো হয়।


বালিয়াকান্দি থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, আমি জানতে পেরেছি ওই ইটের ভাটার মারপিটে ঘটনা ঘটেছে।তবে এখনো কেউ কোন অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


বিবার্তা/ মিঠুন গোস্বামী/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com