পুকুর-ডোবা-নদী-খাল-বাওড়ের জেলা ঝিনাইদহ। তাই বর্ষকাল আসলেই সাপের উপদ্রব বেড়ে যায়। প্রায় প্রতিদিনই সাপে কামড়ানো রোগী আসছে হাসপাতালে। কিন্তু সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপের বিষের প্রতিষেধক না থাকায় চরম জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে এ জেলার মানুষ।
রোগীদের স্বজনদের দাবি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বিষধর সাপে কেটে বহু মানুষ মারা যাওয়ার আশঙ্কা। জানা যায়, বাপ্পির বাড়ি ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ড উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে সাপে কাটার পর সু-চিকিৎসার আশায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। প্রতিটা মুহূর্ত বাপ্পিসহ স্বজনরা উৎকণ্ঠার সাথে পার করছে। কথন কি হয়। কারণ গত একমাস সদর হাসপাতালে সাপের বিষের প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনম নেই।
ছেলেকে বাঁচাতে পারবেন কিনা তা মারাত্মক সংশয়ে রয়েছে পুরো পরিবার। গত মঙ্গলবার একই দিনে জেলার শৈলকূপা উপজেলার দিঘল গ্রামের তাবাচ্ছুম তমা (৬) এবং হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের সিনথিয়া (৫) নামের দুই শিশু সাপে কেটে মারা গেছে। অভিযোগ তমা সঠিক সময়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছায়। কিন্তু অ্যান্টিভেনম না থাকায় তাকে ফরিদপুর রেফার্ড করা হয়। রাস্তায় তার মৃত্যু হয়। তাদের পরিবারগুলোতে চলছে শোকের মাতম ।
সদর হাসপাতালের সামনে ওষুধ বিক্রেতা আল-হেরা ফার্মেসির মালিক এস এম মসলেম উদ্দীন জানান, জেলার কোথাও জীবন রক্ষাকারী এ প্রতিষেধকের সাপ্লাই নেই। সাধারণ মানুষ যে হাসপাতালের বাইরে থেকে এ প্রতিষেধক কিনবে তারও কোনো উপায় নেই। অন্যান্য ওষুধ বিক্রেতাদের অভিযোগ অ্যান্টিভেনমের সাপ্লাই নেই প্রায় ১ মাসের অধিক।
এদিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের দেওয়া তথ্য মতে, জেলায় এ বছর সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৪০ জন। এ বছর বিভিন্ন সময় ৪ জন মারা গেলেও অভিযোগ আছে অ্যান্টিভেনম না পাওয়ায় রোগী মারা গেছে ২ জন।
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু জানান, এ সময়ে জীবন রক্ষাকারী এ ওষুধের সংকট কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ব্যাপারে কারো কোনো গাফিলতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার দাবি জানান। তবে তিনি এও জানান, যদি হাসপাতাল আমাদের জানায় তবে অবশ্যই ব্যক্তিগত উদ্যোগে আমরা এর একটা না একটা ব্যবস্থা অবশ্যই করতে পারি।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, গত ১ মাস সদর হাসপাতাল ও শৈলকূপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় ২৬ দিন অ্যান্টিভেনম নেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদা দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। তিনি অবশ্য দাবি করেন বর্তমানে মাত্র ১৫ ডোজ অ্যান্টিভেনম মজুদ আছে বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
বিবার্তা/রায়হান/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]