কৃষকের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল সোনালী আঁশ পাট। আর এ পাটের জন্য কুষ্টিয়ার খ্যাতি রয়েছে। তবে উৎপাদন খরচসহ সবধরণের খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটের মূল্য বৃদ্ধির দাবি কৃষকদের।

এখন পাটকাটা ও পাটপচনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কুষ্টিয়ায় চলতি মৌসুমে ৩৭ হাজার ৭৪২ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। যা গত মৌসুমের চেয়ে ৩ হাজার ৮৫৮ হেক্টর জমি কম। জেলায় চলতি মৌসুমে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪১ হাজার ৬০০হেক্টর জমি।

এরমধ্যে জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা দৌলতপুরে চাষ হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকার ফলে পাটচাষ ভাল হওয়ায় ফলনও ভাল হচ্ছে। তাই পাটের সুদিন ফেরায় সোনালী আঁশ খ্যাত পাট চাষের দিকে জোর দিয়েছেন কুষ্টিয়ার কৃষকরা। তবে পাটচাষের উৎপাদন খরচ, সার, বীজ ও শ্রমমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটের বর্তমান বাজার দর নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।

প্রতিবিঘা জমিতে পাট চাষে খরচ হচ্ছে ১০থেকে ১২হাজার টাকা। বর্তমান পাটের বাজারদরে কৃষকদের মধ্যে রয়েছে অসন্তুষ্টি। তাদের দাবি প্রতিমন পাটের মূল্য ৩ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হোক।

জেলার কৃষি প্রধান উপজেলা দৌলতপুরের পাটচাষী আকবর হোসেন জানান, এবছর ৩বিঘা জমিতে পাটচাষে তার খরচ বিঘাপ্রতি গড়ে ১০হাজার টাকা করে। এবছর বৃষ্টি কম হওয়ায় পুকুর, খাল, বিল ও জলাশয়ে পানি না থাকায় পাট পচন করতে বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পাট চাষীদের। তারপরও পাটের মূল্য বৃদ্ধি করা না হলে আগামীতে পাটচাষ আরো কমবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নুরুল ইসলাম জানান, কৃষি প্রধান দৌলতপুর উপজেলায় পাটচাষে জেলার লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধেকই চাষ হয়েছে দৌলতপুরে। কৃষকদের সবধরণের সহায়তা দেওয়ায় পাটের ফলনও ভাল হচ্ছে। তবে বৃষ্টির অভাবে পাট পচন নিয়ে সমস্যায় রয়েছেন কৃষকরা।

এদিকে পাটের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ নতুন জাতের বীজ, সার ও প্রণোদনা প্রদান এবং প্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রয়োজনীয় পরমার্শ দেওয়ায় পাটচাষ ও ফলন ভাল হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ।

বিগত বছরগুলো সোনালী আঁশ পাট ছিল কৃষকের গলার কাটা। পাটের সুদিন ফেরায় গত কয়েক বছর ধরে কৃষকরা পাটচাষে আগ্রহী হয়েছেন। এখন প্রয়োজন পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা।

বিবার্তা/শরীফুল/জবা