রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার দক্ষিণ কোলকোন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বোর্ডে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪৭ জন। কিন্তু শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত মাত্র ৪ জন।
৯ জুলাই, রবিবার বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির কক্ষে সরেজমিনে দেখা গেছে এই চিত্র।
শুধু ৩য় শ্রেণিতে নয়, ঘুরে ঘুরে অন্যান্য শ্রেণিতেও দেখা যায় উপস্থিতির সংখ্যা সন্তোষজনক নয়। বেলা ১২টা ৪৫ মিনিটে শিশু শ্রেণি, প্রথম শ্রেণি ও ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ছুটি হয়ে গেছে।
চোখে পড়ে ৩য় শ্রেণিতে ৪ জন ও ৫ম শ্রেণিতে ১২ জন শিক্ষার্থী। ৪র্থ শ্রেণিতে মাত্র ৮ ছাত্রী বসে লেখায় মগ্ন। শিক্ষক কক্ষে ৩ জন শিক্ষক বসে নিজেদের মধ্যে কথা বলছেন। ১২টা থেকে ২য় শিফটের পাঠদান শুরু করার নিয়ম হলেও শিক্ষার্থী না থাকায় শিক্ষকরা বসে অলস সময় পাড় করছেন। বিদ্যালয় চত্বরে সুনসান নীরবতা। দেখে বুঝার উপায় নেই এটি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
এদিকে ২০২১-২২ ও ২২-২৩ অর্থ বছরের স্লিপ ফান্ডের, প্রাক-প্রাথমিক এবং ক্ষুদ্র মেরামতের বাজেট বরাদ্দের ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মোহছেনা খাতুন এর উত্তর আমি কোন প্রকার তথ্য দিব না। তথ্য দিলে স্যারকে দিব।
বিদ্যালয় চত্বরে বিভিন্ন অনুসন্ধানী কার্যক্রম চলাকালে বাজে টিফিনের ঘন্টা। উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তখন জড়ো হন বিদ্যালয়ের মাঠে। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা জানান, আজ তারা বিদ্যালয়ে এসে দেখতে পায় শিশু শ্রেণিতে ৩ জন, ১ম শ্রেণিতে ৪ জন, ২য় শ্রেণিতে ২ জন শিক্ষার্থী। প্রথম শিফটে সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এবং ২য় শিফটে বেলা ১২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত পাঠকার্যক্রম চলে। সাইনবোর্ডে বিদ্যালয়ের মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা উল্লেখ আছে ২৭২ জন।
বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, নতুন এই প্রধান শিক্ষক আসার পর থেকেই বিদ্যালয়ের অবস্থা এরকম হয়ে গেছে। আগে সবসময় মুখর ছিল। এখন নিস্তব্ধ বিদ্যালয় চত্বর। জবাব চাইবো কার কাছে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহছেনা খাতুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী মোটামুটি উপস্থিত থাকে। আজকে কেন এরকম হলো বুঝতে পারছি না।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষকরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসে। নিয়মিত পাঠদান হয়। আমি আপনাদের কোন প্রকার হাজিরা খাতা ও স্লীপ এর বরাদ্দের কাগজপত্র আজ দেখাতে পারবোনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাগমা সিলভিয়া খান বলেন, আমি খুবই অসুস্থ তিনদিনের ছুটি নিয়েছি।
বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি একেবারেই কম এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহ-শিক্ষা কর্মকর্তা সুলতান সালাউদ্দিন জানান, উপস্থিতি কেনো কম এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করব এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির কোন আচ পেলে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।
গংগাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, বিষয়টি আমি আপনার কাছ থেকে জানলাম। এ বিষয়ে শিক্ষা অফিসারকে তলব করে বিষয়টি জানতে চাইব। আর শীঘ্রই আমি গংগাচড়া উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করব।
বিবার্তা/নাহিদ/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]