সিলেট সিটি নির্বাচনের পরদিন বৃহস্পতিবার থেকেই সিলেটে আবার শুরু হয়েছে লোডশেডিং। নির্বাচনের আগে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও নতুন করে এখন লোডশেডিং শুরু হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, নির্বাচনের আগে নগরে কোনো লোডশেডিং ছিল না। এখন নির্বাচনের পরই লোডশেডিং ফিরেছে। লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
নগরের বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, ভোটের আগের কয়েক দিন বেশ ভালোই কেটেছিল। শহরে কোনো লোডশেডিং ছিল না। তবে ভোটের পরের দিনই আবার লোডশেডিং শুরু হল। আমাদের ভোট নেয়া হয়ে গেছে, আওয়ামী লীগের বিজয় হয়েছে। এখন আর আমাদের খবর রাখার দরকার তাদের নেই। তাই লোডশেডিং শুরু করেছে।
শহরের রিকাবীবাজার এলাকার বাসিন্দা তপন দত্ত জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত লোডশেডিং ছিল। লামাবাজারে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আধ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চার বার লোডশেডিং হয়েছে।
সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) কর্মকর্তারা বলছেন, কয়েকটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় সারা দেশেই লোডশেডিং করতে হচ্ছে। সিলেটও দেশের বাইরে নয়। যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে, সেই অনুযায়ী গ্রাহকদের সরবরাহ করা হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় লোডশেডিং হচ্ছে।
জানা যায়, জ্বালানি সংকটে গত মাসের শেষের দিক থেকে দেশজুড়ে বিদ্যুতর ভয়াবহ লোডশেডিং শুরু হয়। এ সময় সিলেটের বিভিন্ন উপজেলাও দিনের বেশিরভাগ সময় থেকেছে বিদ্যুৎহীন। ব্যক্তিক্রম ছিলো কেবল সিলেট নগর।
গত প্রায় ১৫ দিন অনেকটাই লোডশেডিং মুক্ত ছিলো সিলেট। এই সময়ে ভোটের প্রচারে ব্যস্ত ছিলো সিলেট নগর। তবে বুধবার নির্বাচন শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পরিস্থিতি বদলে গেছে। ভোটের পরদিন থেকেই শহরে শুরু হয়েছে লোডশেডিং।
২ জুন নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর থেকে সিলেট নগরে বিদ্যুতের লোডশেডিং কমতে থাকে। বুধবার ভোটের দিন পর্যন্ত সিলেট মহানগরে লোডশেডিং প্রায় ছিলই না। তবে বৃহস্পতিবার নির্বাচনের পরদিনই সিলেটে দেখা দিয়েছে লোডশেডিং।
বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিডিবি) সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে বৃহস্পতিবার বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৭১ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। আর বরাদ্দ মিলেছে ১১৩ দশমিক ৫ মেগাওয়াট। সে হিসাবে সরবরাহে ঘাটতি ৫৮ মেগাওয়াট। এই ঘাটতি মেটাতে লোডশেডিং করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিডিবি) উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনের দিন নগর এলাকাগুলোকে লোডশেডিংমুক্ত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এখন নির্বাচন শেষ হওয়ায় পরিস্থিতি বাস্তব অবস্থায় ফিরে গেছে।
তবে পিডিবি সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, গত কয়েকদিন বৃষ্টি ছিলে। ফলে চাহিদাও কম ছিলো। আজ বৃষ্টি নেই, গরমও বেড়েছে। এ কারণে চাহিদা বেড়ে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সিটি নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সিলেট মহানগর এলাকায় পর্যাপ্ত লোড সরবরাহ করায় লোডশেডিং কম ছিল। বর্তমানে লোডের পরিমাণ স্বাভাবিক করায় লোডশেডিয়ের পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা সিলেট নগরীতে ৩৩ দশমিক ৮২ শতাংশ লোডশেডিং বাস্তবায়ন করছি।
তিনি বলেন, আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। নির্বাচনের পর লোডশেডিং হওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]