চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে ভাঙন
আরও দুইশতাধিক বাড়িঘর নদের গর্ভে, ঝুঁকিতে তিনশতাধিক পরিবার
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৩, ১৫:৪০
চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে ভাঙন
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কয়েকদিন ধরে উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও বৃষ্টিপাতের ফলে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি পেয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করছে। পানি বাড়ার সাথে বেড়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের তীব্রতা। দুই এক সপ্তাহের ব্যবধানে কুড়িগ্রামের চিলমারীর এক চরের আরও দু’শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ভাঙন ঝুঁকিতে আরও তিন শতাধিক পরিবার রয়েছে বলেও জানা গেছে। ইতিমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেছেন প্রশাসন।


জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্রের একটি চরে উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরবড়ভিটা ও নয়ারহাট ইউনিয়নের বজরা দিয়ার খাতা ও চিলমারী, থানাহাট ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার মানুষ রয়েছেন। গতবছর থেকে এ চরে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। একবছর ধরে ভাঙনে প্রায় ৫শতাধিক পরিবারের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়েছে।


সরেজমিনে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ার সাথে সাথে নদীর তীব্র স্রোত চরটিতে সরাসরি আঘাত হানছে। এতে দ্রুত সময়ে ভেঙে যাচ্ছে চরটি। এসময় দেখা গেছে অনেকেই সরিয়ে নিচ্ছেন তাদের বাড়ির জিনিসপত্র। তবে এসময় স্থানীয়রা অভিযোগ করেন বাল্কহেড দিয়ে নদ থেকে বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে।


এসময় কথা হয় সম্প্রতি ভাঙনের কবলে পড়া আশাদুল ইসলামের সাথে। তিনি ইতিমধ্যে আরও দুইবার ভাঙনের কবলে পড়েছেন। তিনি জানান, গেলে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার ভাঙনের কবলে পড়ে ভিটে মাটি হারিয়েছেন। এই ভাঙনেও তার ভিটেবাড়ি নদী গর্ভে গেছে। বর্তমানে তিনি সামনের চরবড় ভিটার আরেকটি অংশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি পেশায় দিনমজুর বলে জানান।


ভাঙনের মুখে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত আরেকজন আব্দুল কাদের জানান, রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড চর বড়ভিটা প্রায় সবটুকুই নদে চলে গেছে। এখানে এক বছর ধরে ভাঙন চলছে। প্রায় ৫শ পরিবার গৃহহীন হয়েছেন বলে জানান তিনি। এ বন্যায় তিনি ভাঙনের শিকার হয়ে ভাঙনকবলিত চরের একটু দূরেই স্থানান্তরিত হয়েছেন। তার অভিযোগ ভাঙনরোধে নেয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ।


রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গির আলম বলেন, গত দুই সপ্তাহে আরও দুইশতাধিক পরিবারের বাড়িঘর নদীতে ভেঙে গেছে। আমার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের তো আর লোক নাই ওখানে বলা যায়। ওখানে নয়ারহাটের কিছু মানুষ আছেন। তারাও ভাঙনের স্বীকার।


নয়ারহাট ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, নদীতে পানি বাড়ার সাথে সাথে নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যেহারে ভাঙন শুরু হয়েছে এতে ২৫০ থেকে তিন শতাধিক পরিবার ভাঙন হুমকিতে রয়েছে। ভাঙনের স্বীকার হয়ে অনেকেই এখন স্থানান্তরিত হয়ে কাজল ডাঙার চরে আশ্রয় নিয়েছে।


এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকাটি পরিদর্শন করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে। আর ভাঙন রোধে যেহেতু পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করেন। বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


বিবার্তা/রাফি/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com