ভরা বর্ষায় ব্রিজের ওপর সুুফিয়াদের আশ্রয়
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৩, ১৩:৫০
ভরা বর্ষায় ব্রিজের ওপর সুুফিয়াদের আশ্রয়
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নিজেদের এক টুকরো জমি নেই ভূমিহীন দিনমজুর দম্পতি গোলাম মোস্তফা ও সুুফিয়া বেগমের। অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়ে যাপন করলেও সম্প্রতি সেখান থেকেও উচ্ছেদ হয়েছেন। মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে এই ভরা বর্ষায় পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন নির্মাণাধীন একটি ব্রিজের ওপর। মাথার ওপর ঝড়-বৃষ্টি নিয়ে সেখানেই পরিবার নিয়ে দিনানিপাত করছেন।


গোলাম মোস্তফা ও সুুফিয়া বেগম দম্পতি কুড়িগ্রামের চিলমারীর কলেজ মোড় সবুজপাড়ার বাসিন্দা। হতদরিদ্র এই দিনমজুর দম্পতি ভূমিহীন ও গৃহহীন হলেও তাদের ভাগ্যে জোটেনি কোনও সরকারি ঘর। দীর্ঘদিন অন্যের জায়গায় আশ্রয় নিয়ে জীবন যাপন করলেও বর্তমানে সেই জায়গা ছেড়ে দিতে হয়েছে। ফলে নিরুপায় হয়ে এই দম্পতি তাদের এক মেয়ে ও নাতি নাতনি নিয়ে সেতুর উপর চালা করে জীবন যাপন করছেন। এক সপ্তাহ ধরে এভাবেই চলছে তাদের জীবন। চলমান বৃষ্টিপাত তাদের এই ভাসমান জীবনের বিড়ম্বনা আরও বহুগুণ বাড়িয়েছে। অসহনীয় এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে সরকারের কাছে জায়গা ও ঘরের দাবি জানিয়েছেন এই দম্পতি।
গোলাম মোস্তফা জানান, বাস্তুহারা হওয়ায় ৫ সদস্যের পরিবার নিয়ে তিনি এখন কোথায় যাবেন, কোথায় থাকবেন, এই ভেবে কুল কিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না।


তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকবছর ধরে অন্যের জমিত ঘর করি পরিবার নিয়ে বাস করছিলাম। কয়দিন আগে সেখান থাকি তুলি দিছে । যার জমি তাই আর থাকপার দিবার নয়। কুল কিনারা না পায় ব্রিজের ওপর কোনো রকম চালা বানেয়া আশ্রয় নিছি। কিন্তু এই বৃষ্টির দিনত খ্যাতা বালিশ সউগ ভিজি যায়, কেমন করি থাকি! সরকার এখনা জায়গা আর ঘর দিলে হামার নিস্তার হয়।’
মোস্তফার স্ত্রী সুফিয়া বেগম জানান, অভাবের সংসারত খুব টানা পোড়নের মধ্যে আছি। ইয়ার মধ্যে জায়গা জমি নাই। ব্রিজের ওপরত চালা করি আছি। ঝরিত সেটাইও ভিজি যাওয়া নাগে। স্বামী সউগ সময় কাজও পায় না। খুব কষ্টে জীবন চলবার লাগছি। সরকার একটা ঘর দিলে আমাদের এই কষ্ট দূর হইলো হয়।’ একটি স্থায়ী আবাসের দাবি জানান এই গৃহবধূ।
থানাহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মিলন বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি। ওই দিনমজুরকে সরকারি ঘর দিতে চাইলেও তারা ওই গ্রাম ছেড়ে যেতে রাজি হননি। তারা চাইলে পরবর্তী বরাদ্দে তাদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করা হবে।’
ঘর পাওয়ার প্রস্তাব পেলেও না নেওয়ার প্রশ্নে দিনমজুর গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমাক আরেক ইউনিয়নের চর কড়াইবরিশালে ঘর দিতে চাইছে। আমি এই গ্রাম ছাড়ি চরে যাইতে চাই না। এখানেও তো অনেক জায়গা আছে। আমাক এই গ্রামত থাকার ব্যবস্থা করি দেন।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এই মুহূর্তে ঘর বরাদ্দ নেই। তবে তারা যদি চান তাহলে চর এলাকায় থাকার জন্য ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া যাবে।’ খোঁজ খবর নিয়ে অসহায় এই দম্পতির পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন ইউএনও।


বিবার্তা/রাফি/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com