
দেশজুড়ে বইছে তীব্র দাবদাহ। এ অবস্থায় জনজীবন যখন বিপর্যস্ত, তখন মরার ওপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে লোডশেডিং। এবার পল্লী বিদ্যুতের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এর লোডশেডিং। গ্রাহক চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের ঘাটতি থাকায় লোডশেডিং বেড়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে কয়েক ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। আর গ্রামাঞ্চলে পল্লীবিদ্যুতের গ্রাহকদের বিদ্যুতহীন থাকতে হচ্ছে ১০-১২ ঘণ্টা পর্যন্ত। লোডশেডিংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যও।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দেয়া তথ্যমতে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ শাখা-১ এর আওতাভুক্ত এলাকায় দিনেরবেলা বিদ্যুতের চাহিদা ২০ থেকে ২৪ মেগাওয়াট। আর সন্ধ্যার পর চাহিদা ২৫ মেগাওয়াটের মতো। বরাদ্দ কম থাকায় বর্তমানে দিনের বেলা প্রায় ৯ মেগাওয়াট এবং রাতের বেলায় ঘাটতি থাকছে ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ফলে প্রতি এক ঘণ্টা পর পর এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
এছাড়া জেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের দিনের বেলায় বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ১০০ থেকে ১১০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ পাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ মেগাওয়াট। আর সন্ধ্যার পর থেকে চাহিদা বাড়তে থাকে। যা প্রায় ১৫০ মেগাওয়াটে দাঁড়ায়। এ সময়ে ঘটাতি থাকে ৪০ থেকে ৫০ মেগাওয়াট মতো। ফলে প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকে পল্লী বিদ্যুতের।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার বাসিন্দা সাদেকুল ইসলাম ভূইয়া জানান, চম্পকরগর বাজারে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট আছে তার। ব্যাংকিং সময়সূচিতে লোডশেডিং বেড়েছে। এতে গ্রাহকসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অন্তত ৭-৮ বার লোডশেডিং হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা হোসনে আরা রহমান জোনাকী জানান, কয়েকদিন ধরে গরম বেড়েছে। গরমের সাথে সাথে লোডশেডিং বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। ভোররাতেও লোডশেডিং হয় এখন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ৩-৪ বার লোডশেডিং হয়। এতে করে বাসা-বাড়ির স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যহত হয়। গরমের কারণে শিশুরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায়।
শহরের কোর্ট রোড এলকার স্বপ্নলোকে ফ্যাশন হাউজের পরিচালক সুমন সাহা জানান, লোডশেডিংয়ের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ব্যবসায়। ক্রেতারা দোকানে এসে গরমের কারণে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারেন না। অনেক ক্রেতা কেনাকাটা না নিয়েই দোকান থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ শাখা-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার বলেন, বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে বাধ্য হয়েই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। গরম কমে গেলে বিদ্যুতের চাহিদাও কমবে। তখন লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আক্তার হোসেন বলেন, গরম বাড়ার কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু সে অনুপাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন বাড়েনি। ফলে সবসময় চাহিদার পুরো বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা এখন গড়ে ৭-৮ ঘণ্টা লোডশেডিং দিচ্ছি। তবে অন্যান্য জেলার তুলনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লোডশেডিং কম।
বিবার্তা/আকন্ঞ্জি/রোমেল/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]