সুন্দরবনে ৩ মাস পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ১৫:২৮
সুন্দরবনে ৩ মাস পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
মোংলা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

মাছ ও বন্যপ্রাণীর বংশবৃদ্ধি, বিচরণ এবং প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় বৃহস্পতিবার (১ জুন) থেকে তিন মাসের জন্য বন্ধ হচ্ছে সুন্দরবনে সকল ধরনের প্রবেশাধিকার। এর ফলে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পর্যটক প্রবেশ ও সাধারণ মানুষের চলাচলসহ নদী-খালে মাছ শিকারও বন্ধ থাকবে।


তবে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বলে দাবি পরিবেশবাদীদের।


সুন্দরবন মৎস্য সম্পদের ভাণ্ডার নামে পরিচিত। তাই মাছের প্রজনন ও বন্যপ্রাণী বংশবৃদ্ধি নির্বিঘ্ন করতে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে সব ধরনের নৌযান, পর্যটকবাহী লঞ্চ-জালী বোটসহ সকল প্রকারের জেলে বাওয়ালি বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।


এই নিষেধাজ্ঞার ফলে গত ২০ মে থেকে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছে। এ নির্দেশনা থাকবে আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত। এছাড়া ১ জুন থেকে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে ঢুকতে পারবে না কোনো পর্যটকও। এ সময়ের মধ্যে কোনো নৌযানও ঢুকতে পারবে না সুন্দরবনসহ কোনো পর্যটক স্পটে।


সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, 'এখন সুন্দরবনে ২৫১ প্রজাতির মাছের প্রজনন মৌসুম। তাই বন বিভাগ থেকে জেলেদের জন্য সকল প্রকারের পাস পারমিট বন্ধ রাখা হয়েছে। বনের নদী ও খালে নৌযান চলাচল করলে মাছের ডিম ছাড়তে সমস্যা হবে। তাই সকল ধরনের নৌযান চলাচলও বন্ধ থাকবে।'


তিনি আরও বলেন, 'বনে ৩১৫ প্রজাতির পাখি, ৩৫ প্রকারের সরীসৃপ, ৪২ প্রকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে। এসব বন্য প্রাণীর মধ্যে রয়েছে বাঘ, হরিণ, শুকর, বানর, কুমির, ডলফিন, ভোদড়, বন বিড়াল ও মেছো বাঘ। এখন তাদের প্রজনন মৌসুম চলছে। এ জন্যই এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য অধিদফতর।'


সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ফলে পর্যটকদের জন্য দেশের একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র করমজল, পর্যটক স্পট হারবাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, হিরন পয়েন্ট, নিল কমল, দুবলা, আলোর কোল, টাইগার পয়েন্ট কলাগাছিয়াসহ ১১টি স্পটে বন্ধ হচ্ছে পর্যটক প্রবেশ।


সরকারের এমন সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বাগেরহাট জেলা শাখার আহ্বায়ক নুর আলম শেখ।


তিনি বলেন, 'বন সংলগ্ন পশুর নদে বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ ও দেশিয় লাইটার চলাচল স্বাভাবিক রেখে শুধুমাত্র পর্যটক বহনকারী লঞ্চ ও জেলে-বাওয়ালীদের নৌকা-ট্রলার বন্ধ করে প্রজননের কোনো লাভ হবে না। নদী ও খালে নৌযান বা পর্যটকরা বনের অভ্যন্তরে চলাচলের সময় শব্দ করলে প্রজনন বিঘ্নিত হবে। তাই নৌকা বা ট্রলার নিয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু জাহাজ ও লাইটার চলাচল করলে একই শব্দ হবে। তাহলে প্রজনন তো বিঘ্নিত হচ্ছেই।'


বাপার এ নেতার অভিযোগ, পর্যটক ও জেলে-বাওয়ালী বনে প্রবেশ বন্ধ রেখে বনের নিষিদ্ধ খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে স্থানীয় কিছু লোক। আর ওইসব ব্যক্তিদের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করেন বনের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী।


বিবার্তা/জাহিদ রানা/লিমন/ মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com