ঠাকুরগাঁওয়ে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৩, ১৬:০৬
ঠাকুরগাঁওয়ে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

অন্যান্য বছরের তুলনায় ঠাকুরগাঁওয়ে এবার ব্যাপক পরিসরে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন হচ্ছে। জেলার পাঁচ উপজেলার মধ্যে চার উপজেলায় এবার পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৭৯৮ হেক্টর নির্ধারন করা হলেও আবাদ হয়েছে ৮০৬ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত ১৬০ হেক্টর জমির ফসল কাটা হয়েছে। এছড়াও ১১৩ হেক্টর জমিতে শুধু পেঁয়াজ বীজ উৎপাদ হচ্ছে।


প্রতি হেক্টর জমিতে ৯০০ কেজি করে মোট ১০২ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আর প্রতি কেজি বীজের দাম ২ হাজার করে ধরা হলে শুধু ঠাকুরগাঁও জেলায় ২০ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকার পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন হবে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপতরের উপ পরিচালক।


আগে স্বল্প পরিসরে বীজ উৎপাদন করলেও এবার পেঁয়াজের চাহিদা বেশি হওয়ায় এবং দেশের পেঁয়াজ চাষিদের কাছে ভালো বীজ পৌঁছানোর উদ্দেশ্যেই বেশি করে বীজ উৎপাদন করছেন। যাতে করে চাষীরা ভালো বীজ পান ও বেশি করে পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারেন। তার ৩২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। পেঁয়াজের ফুল ও পরাগায়ন ভালো হওয়ায় ৩২ বিঘা জমি থেকে উৎপাদিত বীজ কমপক্ষে ৪০ লাখ টাকা বিক্রয় হবে বলে আশা করছেন কৃষি উদ্যোক্তা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন।


তিনি আরও বলেন, ‘পেঁয়াজ রোপনের মাত্র ৪ মাসের মধ্যে গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করা যায়। আর গাছে ফুল আসার পর থেকে টানা ৩০ দিন সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত হাতের ছোঁয়ায় পরাগায়ন করতে হয়। তাহলে ভালো বীজ ও ফলন পাওয়া যায়। সরকার যদি আমাদের স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে দেন আমি ও আমার মতো আরও অন্যান্য কৃষকরাও ব্যাপক পরিসরে পেঁয়াজ চাষ করতে পারতাম।


এবার ঠাকুরগাঁওয়ে মোয়াজ্জেমের মতো আরও অনেকই পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন করেছেন বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম।


তিনি বলেন, ‘এভাবে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনে অনেক শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এছাড়াও কৃষকদের বীজ উৎপাদনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অদূর ভবিষ্যতে এই মশলা জাতীয় ফসলের উৎপাদন এ জেলায় আরও বৃদ্ধি করা হবে এবং এর সাথে মৌ-চাষকে সম্পৃক্ত করলে কৃষকরা আরও বেশি লাভবান হবেন বলে মনে করেন তিনি।


পেঁয়াজের ঘাটতি ও চাহিদা পূরণে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল গ্রামের যুবক কৃষি উদ্যোক্তা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন। পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন করার জন্য ৩২ বিঘা
জমিতে চাষ করেছেন পেঁয়াজ। পর্যাপ্ত পরিমাণে মৌমাছি না থাকায় বীজ উৎপাদনে মানুষের হাতের ছোঁয়ায় করছেন পরাগায়ন। এতে স্থানীয়দের যেমন আয়ের সুযোগ হয়েছে। তেমনি এই বীজ দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে বলে আশা করছেন এই উদ্যোক্তা।


শুধু মোয়াজ্জেমের বীজ উৎপাদন খামারেই প্রতিদিন কাজ করে অন্তত ৮০ জন মানুষ। তেমন মৌমাছি না থাকায় ও ভালো বীজ উৎপাদনের জন্য মোয়াজ্জেমের পেঁয়াজ ক্ষেতে সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত পরাগায়ন করতে প্রতিদিন ৭০-৮০জন শ্রমিক কাজ করে।


বিবার্তা/মিলন/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com