কুড়িগ্রামে প্রধান শিক্ষক সংকট, শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশা
প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:৪২
কুড়িগ্রামে প্রধান শিক্ষক সংকট, শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশা
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুড়িগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ৩ শত ৬৬ টি পদ শূন্য রয়েছে। ফলে ঐ সকল বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষক সংকটের কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ প্রশাসনিক কার্যক্রমেও দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। 


কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলায় মোট ১হাজার ২শত ৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩ শত ৬৬ টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এরমধ্যে ২০১৭ সাল থেকে ২শ ৩৪টি বিদ্যালয়ে ১জন করে সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক পদে চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু এখনও প্রধান শিক্ষক বিহীন রয়েছে ১শ ৩২টি বিদ্যালয়। ফলে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে এসকল বিদ্যালয়গুলো। অন্যদিকে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষকরাই একসাথে দুটি দায়িত্ব পালন করলেও পচ্ছেন না কোন সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা। এ বিষয়ে নেই সরকারি নির্দেশনাও। হতাশার মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন তারা। এ অবস্থায় বিঘ্নিত হচ্ছে সহকারী শিক্ষকদের তদারকি, শ্রেণি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, নিয়মিত পাঠদানসহ প্রশাসনিক কার্যক্রমেও। 


কুড়িগ্রাম সদরের করিমের খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলতি দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষক নুরজাহান বেগম বলেন, আমরা হতাশা নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছি। দ্রুত সরকারি গেজেট প্রকাশ করে আমাদের সম্মান রক্ষা করা হোক। 


অন্যদিকে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মুক্তারাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গত ২ বছর আগে মৃত্যু বরণ করলেও ঐ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদটি শূন্য রয়েছে। এ বিদ্যালয়ে চলতি দায়িত্বও দেওয়া হয়নি কাউকে। ঐ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি একজন সিনিয়র শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষক সংকটের কারণে ৯জন শিক্ষকের স্থলে ঐ বিদ্যালয়ে এখন ৫ জন শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজনীন রেবেকা সুলতানা জানান সহকারী শিক্ষক সংকট কারনে  বিঘ্নিত হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়টির পাঠদান কার্যক্রম। 


কোমলমতি শিশুদের পড়াশোনা নিশ্চিত করতে শিক্ষক পদায়ন সহ প্রধান শিক্ষক পদ টি সমাধানের দাবি জানান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা খাতুন। 


মুক্তারাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম  ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন 


সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রধান শিক্ষক সহ সহকারী শিক্ষকের পদ পূরণের জন্য বারবার আবেদন করেও কোন কাজ হয়নি।  


জেলা স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সালাউদ্দিন রুবেল  বলেন প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলির নানান সংকটের কারনে   শিক্ষা ব্যবস্থা  হুমকিতে পড়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন জেলা সদরের চেয়ে আরো নাজুক পরিস্থিতিতে রয়েছে চরাঞ্চল সহ দূর্গম এলাকার বিদ্যালয়গুলো।


জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সংকটের বিষয় দ্রুত সমাধান করা হবে। উচ্চ মহলে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।


জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে  ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান নিশ্চিত করতে দ্রুত প্রধান শিক্ষক সহ-সহকারী শিক্ষকের শুন্য পদ পুরণে ব্যবস্থা নেবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ এমন  জোর দাবি জানান  শিক্ষক, অভিভাবকসহ বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। 


বিবার্তা/বিপ্লব/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com