প্রায় ৭০ বছর পর টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার মাইঠান গ্রামে পৈতৃক ভিটায় এসেছেন আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ভাষাসৈনিক শামছুল হকের দুই মেয়ে, শাহীন ফাতেমা দিল ও শায়েকা দিল।
শাহীন দিল ফাতেমা যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক। অন্যদিকে, শায়েকা দিল যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA) এর জ্যোতিঃপদার্থবিদ।
তারা উভয়েই ছোটবেলায় একবার মাইঠান এসেছিলেন। কিন্তু সেই স্মৃতি তাদের মনে নেই। বাবার ১০৫তম জন্মদিনে আবার আসলেন তারা। সারাদিন ঘুরে দেখলেন বাবার স্মৃতিচিহ্ন। এসব দেখে আপ্লুত হন তারা।
শামছুল হকের হক ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম স্বপন গণমাধ্যমকে জানান, ১ ফেব্রুয়ারি সকালে বাবা শামছুল হকের প্রতিকৃতিতে দুই বোন শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তাঁরা টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খানের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় ফজলুর রহমান খান তাঁদের টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তাঁতের শাড়ি উপহার দেন। এরপর কালিহাতীর এলেঙ্গায় শামছুল হকের নামে প্রতিষ্ঠিত কলেজে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় শেষে বিকেলে জোকারচরে ২০০৭ সালের মে মাসে সন্ধান পাওয়া শামছুল হকের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
মাইঠা টেউরিয়া এম কে দাখিল মাদ্রাস মাঠে শামছুল হকের জন্মদিন উপলক্ষ্যে কেক কাটার আয়োজন করা হয়। সেখানে শামছুল হক ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম মোস্তফাসহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন। এরপর শামছুল হকের মাগফিরাত কামনায় করা হয় দোয়া।
এসময় শাহীন ফাতেমা দিল বলেন, আমি ও আমার বোন টাঙ্গাইরে এসে অনেক খুশি হয়েছি। আপনার আমার বাবার স্মৃতি ধরে রেখেছেন। উনাকে মনে রেখেন। এতে আমরা গর্বিত।
শামছুল হক ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম মোস্তফা বলেন, শামছুল হক ১৯৪৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ইডেন কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক আফিয়া খাতুনকে বিবাহ করেন। এর ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন শামছুল হক। এর ১৯৫৩ সালে তার দুই মেয়েকে নিয়ে স্ত্রী আফিয়া খাতুন উচ্চশিক্ষার জন্য নিউজিল্যান্ড চলে যান। তখন শাসছুল হক কারাগারে ছিলেন।
১৯৬১ সালে শামছুল হকের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটান আফিয়া। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর শামছুল হকের মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। ১৯৬৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর অসুস্থ মাকে দেখার জন্য বাড়িতে আসেন শামছুল হক। পরদিন বাড়ি থেকে চলে যান। এরপর আর তার খোঁজ মেলেনি।
আবুল কালাম মোস্তফা আরও জানান, শামছুল হকের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তার স্ত্রী আফিয়া হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পাকিস্তানি নাগরিক আনোয়ার দিলকে বিয়ে করেন। সেখানেই শামছুল হকের দুই মেয়ে বেড়ে উঠেন।
বিবার্তা/জামাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]