
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিদেশ পাঠানোর নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মো. রনি মিয়া নামে দুবাই ফেরত এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার নামে সম্প্রতি মানব পাচার আইনে ঝিনাইদহ আদালত ও কালীগঞ্জ থানায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। পুলিশ তাকে গত ১৮ জানুয়ারী গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
রনি উপজেলার ভাটাডাঙ্গা গ্রামের আলতাব হোসেনের একমাত্র ছেলে। সম্প্রতি সে দুবাই থেকে দেশে আসলে পুলিশ তাকে আটক করে।
রনির বিরুদ্ধে করা একটি মামলার বাদি মোা. আবির হোসেন। আবির জেলার কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন কাশিপুর গ্রামের মো. আব্দুস সাামাদের ছেলে। আবির হোসেন দুবাই যাওয়ার জন্য প্রতারক রনি মিয়ার কাছে দুই কিস্তিতে চার লাখ টাকা প্রদান করে। এরপর ১৬ মে, ২০২২ তারিখে আবিরকে দুবাই পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যাওয়ার আগে সেদেশের একটি কোম্পানীতে এ্যালুমেনিয়াম ফিটিংসের কাজ দেওয়ার কথা থাকলেও কোন কাজ না দিয়ে একটি বদ্ধ ঘরে আটকিয়ে রাখা হয়। পরে জানতে পারে তাকে ৩ মাসের একটি টুরিষ্ট ভিসায় দুবাই আনা হয়েছে। তার সাথে আরো দুই যুবককে দুবাই নিয়ে যায় প্রতারক রনি। বাকি দু’জন হলো কালীগঞ্জ উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের রিপন হোসেন ও একই জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার কাগমারি গ্রামের হাফিজুর রহমান। তাদের তিনজনকে ৮৫ দিন সেদেশের একটি বদ্ধ ঘরে আটকিয়ে রাখার পর দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
বিদেশ ফেরত আবির হোসেন জানায়, দুবাই যাওয়ার পর রনি আমাদের বিমানবন্দর থেকে নিয়ে একটি শহরের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আমাদের রেখে বাইরে যেতে নিষেধ করার পরামর্শ দিয়ে বলে কাজ পেলে তোমাদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু দিনের পর দিন পার হয়ে গেলেও কোনকাজ তো দুরের কথা পরিবারের কাছে বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করতে থাকে। এসময় আমরা বাংলাদেশ থেকে পাঠানো টাকায় পাশের একটি হোটেল থেকে কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে ছিলাম। পরে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে প্লেন ভাড়া এবং মুক্তিপণ বাবদ পাঁচ লাখ তুলে দেওয়া হয়। পরে আমাদের বাড়ি থেকে টাকা পাঠানোর পর প্লেন টিকিট কেটে ০৭/০৮/২০২২ ইং তারিখে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিদেশ গিয়ে টাকা আয়ের পরিবর্তে পরিবারের সহায় সম্বল হারিয়ে পথে বসার অবস্থা। দেশে ফিরে টাকা ফেরত পেতে জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোন সুরাহা না হওয়ায় আদালত মামলা করি।
সম্প্রতি রনি দেশে আসলে পুলিশ তাকে গত ১৮ জানুয়ারী গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
কালীগঞ্জ থানার এসআই প্রকাশ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মানব পাচার আইনে করা একটি মামলায় প্রতারক রনিকে আটক করে আদালতে পাঠিয়েছি। তার সাথে আরো কয়েকজন জড়িত আছে যাদের আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
বিবার্তা/রায়হান/বর্ষা/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]