মাঘের শীতে কাঁপছে শ্রীমঙ্গল, তাপমাত্রা নামল ৫ ডিগ্রিতে
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:৫২
মাঘের শীতে কাঁপছে শ্রীমঙ্গল, তাপমাত্রা নামল ৫ ডিগ্রিতে
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

প্রবাদে আছে, মাঘের শীতে বাঘ কাঁপে। তবে বাঘ কাঁপছে কি না, সেটা জানা না গেলেও মাঘের শীতে চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের মানুষ যে কাঁপছে সে খবর মিলেছে। এই শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) জেলার শ্রীমঙ্গলে ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। গতকাল ছিল ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


আবহাওয়া অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান বলেন, তাপমাত্রা নিচে নামার কারণে মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা।


এদিকে শীতবস্ত্রের চাহিদা বাড়ায় ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। নিম্নবিত্ত, অসচ্ছল ও খেটে খাওয়া মানুষরা পড়েছে বিপাকে। হাড় কাঁপানো তীব্র শীতে কাঁপছেন তারা। শীতের কারণে সময়মত কাজে যোগ দিতে পারছে না শ্রমজীবী মানুষ। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন চা শ্রমিক, বোরো চাষি, ছিন্নমূল ও দিনমজুররা।


মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি, হাকালুকি, হাইল হাওর বেষ্টিত এলাকার অধিকাংশ মানুষই খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস। শীত এলেই তাদের কষ্ট বাড়ে। ঘন কুয়াশার কারণে সময় মত কাজে যেতে পারছে না তারা।


কাওয়াদীঘী হাওর এলাকার কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, বাইরে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, তবুও কাজের জন্য বের হয়েছেন।


সদর উপজেলার মৌলভী চা বাগানের শ্রমিক রামকানু বলেন, হাড় কাঁপানো শীতে বাগানে কাজ করতে অনেক কষ্ট। কাজে না গেলে মজুরি মিলবে না।


পৌর শহরের দিনমজুর নজির আলী বলেন, প্রতিদিন সকালে কাজ পাবো এই আশায় বের হই, কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে বেশ ঠাণ্ডা পড়ায় কাজও পাই না।


মৌলভীবাজারের সিভিল‌ সার্জন চৌধুরী জালাল উদ্দীন মোর্শেদ জানান, মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে সহ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া, জ্বর-সর্দিসহ শীতকালীন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ শতাধিক। এর মধ্যে অধিকাংশই প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন।


হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ে হাসপাতালে। সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় শিশু ও বয়স্করা। অন্যান্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ রোগীকে প্রতিদিন আউটডোর এবং ইনডোরে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।


মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিশ্বজিৎ দেব বলেন, শীতের প্রভাবে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশু ও বয়স্ক রোগীর চাপ বাড়ছে।


এদিকে জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে জেলার ৬৭ ইউনিয়ন ও পাঁচ পৌরসভায় ৩৫ হাজার ২৮০টি কম্বল পাঠানো হয়েছে। প্রতি উপজাত ২ লাখ করে টাকা পাঠানো হয়েছে, শীতবস্ত্র কিনে দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণ করার জন্য। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আরো কম্বলের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পেলে বিতরণ করা হবে।


বিবার্তা/বিএম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com