বইছে শৈত্যপ্রবাহ, তাই শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন চায়ের রাজ্য মৌলভীবাজার জেলার বাসিন্দা ও পর্যটকরা। আজও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে জেলার শ্রীমঙ্গলে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) শ্রীমঙ্গলে রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। মঙ্গলবারের তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ছিল এ বছর শ্রীমঙ্গলে এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
এদিকে হাড়কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকা ও হাওড়াঞ্চলের অসহায়, দরিদ্র জনগোষ্ঠী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের লোকজন।
গত কয়েক দিন ধরেই জেলাজুড়ে চলছে শীতের দাপট। প্রচণ্ড শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। বেশি শীত অনুভূত হওয়ার পাশাপাশি রাতে কুয়াশার ঘনত্বও বেশি থাকছে। এই কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে বেড়িয়েছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা। পাহাড়-টিলা, হাওর, চা বাগান অধ্যুষিত জেলা মৌলভীবাজারে শীত বেড়েছে প্রান্তিক জনপদ থেকে নগরজীবনে।
সদরের মৌলভী চা-বাগানের শ্রমিক সুমন গোয়ালা বলেন, ‘রাতের বেলা চা-বাগানে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পড়ে। আমাদের অনেক কষ্ট করে থাকতে হয়। সবার ঘরে চাহিদামত গরম কাপড় নেই। সরকার থেকে যদি শীতের কাপড় বিতরণ করা হতো, তাহলে আমাদের উপকার হতো।’
এদিকে হাওড়াঞ্চলের জেলে, কৃষক ও শ্রমজীবী লোকজন বিপাকে রয়েছেন। শীত উপেক্ষা করেই তাদের খুব সকালে কাজের তাগিদে ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে।
রাজনগর এলাকার কৃষক বলেন, সুফিয়ান মিয়া বলেন, এখন বোরো চাষের সময়, প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় চাষাবাদ করতে পারছি না। সারাদিন রোদের দেখা পাওয়া যায় না ফলে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে।
এছাড়াও জেলায় বেড়াতে আসা পর্যটকরাও উপভোগ করছেন শীত, পড়েছেন দুর্ভোগেও। অনেকে সকালে বের না হয় একটু দেরিতে বের হন।
ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে আসা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দুই সন্তান, স্ত্রী ও ছোটভাইকে নিয়ে এসেছি শ্রীমঙ্গল ঘুরতে। এখানে এত ঠাণ্ডা, আগে বুঝিনি। কুয়াশা যতক্ষণ ততক্ষণ বের হইনি, রোদ উঠার পর বের হয়েছি।
ট্যুরিস্ট গাইড সাজু মারছিয়াং জানান, এই শীতে পর্যটকদের আগমন বেড়েছে, কুয়াশা জড়ানো চা-বাগানসহ অন্যান্য স্থান ঘুরে বেড়াচ্ছেন। শীত বেশি হওয়ায় অধিকাংশ পর্যটক রোদের দেখা পাওয়ার পর বের হচ্ছেন।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, বুধবার সারাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার। আগামী ৩ দিনের পূর্বাভাস অনুযায়ী তাপমাত্রা কমতে পারে। তাপমাত্রা কমে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে বলে জানা গেছে।
আবহাওয়া অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মো. বিবলু চন্দ্র দাশ বলেন, তাপমাত্রা নিচে নামার কারণে শ্রীমঙ্গলে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। নভেম্বর থেকে হঠাৎ করে বেশি শীত অনুভূত হতে শুরু করেছে। আমাদের রেকর্ড অনুযায়ী, আগামীতে এখানকার শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে। ধীরে ধীরে তাপমাত্রা আরও কমতে থাকবে।
সিলেট বিভাগের মাঝে সবচেয়ে বেশি শীত শ্রীমঙ্গলেই রেকর্ড করা হয়। প্রকৃতি ও পরিবেশগত কারণে এখানকার ঠাণ্ডা সিলেটের অন্যান্য জায়গার তুলনায় বেশি বলে তিনি জানান।
বিবার্তা/বিএম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]