সমুদ্রের অতলে তৈরি হচ্ছে রহস্যময় ‘ডার্ক অক্সিজেন’!
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৯
সমুদ্রের অতলে তৈরি হচ্ছে রহস্যময় ‘ডার্ক অক্সিজেন’!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

রউদ্ভিদ এবং শৈবালসহ সালোকসংশ্লেষী প্রাণীরাই পৃথিবীতে অক্সিজেন তৈরি করতে পারে। এতদিন তাই মনে করা হতো।


কিন্তু, পৃথিবীর গভীর-সমুদ্রতলে, যেখানে সূর্যের আলো পৌঁছতে পারে না, সেখানে কি অক্সিজেন তৈরি হতে পারে? এতদিন পর্যন্ত এর উত্তর ছিল, না। কিন্তু, এতদিনের এই ধারণা পাল্টে দিল এক সাম্প্রতিক গবেষণা।


গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, গভীর সমুদ্রের তলদেশে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪০০০ মিটার নিচে সম্পূর্ণ অন্ধকারে ধাতব খনিজের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তৈরি হচ্ছে রহস্যময় ‘ডার্ক অক্সিজেন’ বা ‘অন্ধকার অক্সিজেন’।


সম্প্রতি, নেচার জিওসায়েন্স জার্নালে ‘অতল সমুদ্রতলে অন্ধকার অক্সিজেন উৎপাদনের প্রমাণ’ নামে এক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এ গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, সালোকসংশ্লেষ ছাড়াও অন্য উপায়েও অক্সিজেন তৈরি হয় এই পৃথিবীতে।


আন্তর্জাতিক গবেষকদের এ দলটি আবিষ্কার করেছে, প্রাণের সম্পৃক্ততা ছাড়াই সেখানে অক্সিজেন তৈরি হচ্ছে। আর সেই অক্সিজেন টিকিয়ে রেখেছে গভীর সামুদ্রিক জীবনকে, যারা সম্পূর্ণ অন্ধকারে বেঁচে থাকে।


তবে, এই ‘অন্ধকার অক্সিজেনে’র সন্ধান অনেক আগেই পাওয়া গিয়েছিল। ২০১৩ সালে, প্রশান্ত ফিল্ডওয়ার্কে গিয়েছিলেন স্কটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর মেরিন সায়েন্সের বিজ্ঞানী, অ্যান্ড্রু সুইটম্যান। ফিল্ডওয়ার্কের সময়, সুইটম্যান এবং তার সহযোগীরা ক্লারিওন-ক্লিপারটন জোনে সমুদ্র-তলের ইকোসিস্টেমগুলো অধ্যয়ন করছিলেন। এই স্থানে, প্রাকৃতিকভাবে সমুদ্রের তলদেশে বেড়ে ওঠা খনিজ আমানত আছে বলে মনে করা হয়। সে খনিজের সন্ধানে গিয়েছিলেন তারা। সেখানেই তারা আবিষ্কার করেন ‘ডার্ক অক্সিজেন’।


তারা দেখেন, কালো এবং গোল গোল পাথরখণ্ড থেকে তৈরি হচ্ছে অক্সিজেন। প্রথমে তারা ভেবেছিলেন, তাদের যন্ত্রপাতিতেই কিছু ভুল আছে। সুইটম্যান জানিয়েছেন, এই গ্রহে অক্সিজেন তৈরি করে একমাত্র সালোকসংশ্লেষী জীবরাই, এমনটাই জানতেন তারা।


কিন্তু বিজ্ঞানীরা দেখেন, প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝখানে কালো এবং বৃত্তাকার পাথর থেকে অক্সিজেন উৎপন্ন হচ্ছে। যন্ত্রের ত্রুটি দূর করতে তারা বিকল্প যন্ত্রপাতি নিয়ে আবারও যান সেখানে। গত ১০ বছর ধরে সব যন্ত্রেই তারা ওই অদ্ভুত অক্সিজেনের সন্ধান পেয়েছিলেন। এরপর আর বাস্তবতাকে অস্বীকার করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।


সুইটম্যান বলেছেন, এখন আমরা জানি, গভীর সমুদ্রেও অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। যেখানে কোনো আলো নেই। আমি মনে করি, বায়বীয় জীবন কোথায় শুরু হতে পারে, আমাদের এই প্রশ্নগুলো পুনরালোচনা করা দরকার।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com