দেশে দেশে ভালোবাসা দিবস
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪১
দেশে দেশে ভালোবাসা দিবস
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন’স ডে বা ভালোবাসা দিবস। এ দিবসের মূলমন্ত্র ভালোবাসা। ভালোবাসা প্রকাশ করতে এ দিনে কপোত-কপোতীরা নানা উদ্যোগ নেন। সব দেশে যে ভালোবাসা দিবসের প্রথা একই রকম এমন নয়।


জেনে নেই বিভিন্ন দেশের ভালোবাসা দিবসের প্রথা সম্পর্কে-


ভিয়েতনাম:


ভিয়েতনামের দম্পতিরা বিশেষ ছুটির দিন হিসেবে ভ্যালেন্টাইনস ডে উদযাপন করেন। যাকে যে ভালোবাসেন, এদিন তাঁকে ফুল-চকলেট উপহার দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি ভ্যালেন্টাইনস ডে তারা সৃজনশীল ও আধুনিকভাবে উদযাপন করেন। অনেকেই এদিন শহরের আশপাশে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এ ছাড়া এই দিনে প্রিয়জনকে গহনা, গোলাপ বা নানা ধরনের পোশাক উপহার দেওয়ার প্রচলন আছে। দু’জনের নাম খোদাই করা ব্রেসলেটের মতো গহনা, ঘড়িও পরস্পরকে উপহার দেন তারা। তাদের আরেকটি ঐতিহ্য হলো ‘এনগে ইয়েউ থুওং’– যা ‘লাভ অ্যান্ড কেয়ার’ নামে পরিচিত। এই দিনে দম্পতিদের একসঙ্গে সময় কাটাতে উৎসাহিত করা হয়। এদিন তারা একসঙ্গে ডিনারে যান, সিনেমা দেখেন বা খেলাধুলার মতো নানা কার্যকলাপে অংশ নিয়ে সঙ্গীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেন।


ফিনল্যান্ড:


ফিনল্যান্ডে ভালোবাসা দিবস বন্ধু দিবস নামে পরিচিত। এই দিনে বন্ধুরা একে অপরকে কবিতা লিখে বা সুন্দর মেসেজের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ফিনল্যান্ডে এদিন লাল গোলাপ দেওয়াও বেশ জনপ্রিয়। কারণ, এই ফুল বন্ধুত্ব ও আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।


ঐতিহ্যটি ১৯ শতকের শেষের দিকে শুরু হয়, যখন ‘আকসেলি গ্যালেন-ক্যালেলা’ নামে একজন ফিনিশ শিল্পী তাঁর বন্ধু এডভার্ড গ্রিগের কাছ থেকে গোলাপের তোড়া পেয়েছিলেন।


ডেনমার্ক:


ডেনমার্কে ভ্যালেন্টাইনস ডে ভ্যালেনটিন্সডাগ নামে পরিচিত। বিভিন্ন কার্যকলাপ এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে দিনটি উদযাপিত হয়। এ বিশেষ দিনে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য দম্পতিদের মধ্যে কার্ড বা বিভিন্ন উপহার যেমন– ফুল, চকলেট, গহনা বিনিময় করার প্রথা প্রচলিত রয়েছে। এ উৎসবের মাধ্যমে যারা অবিবাহিত বা সিঙ্গেল, তাদের সঙ্গীকে খুঁজে পাওয়ারও একটা সুযোগ থাকে। ভ্যালেনটিন্সড্যাগ উৎসবের মধ্যে পারিবারিক নৈশভোজও অন্তর্ভুক্ত। এদিন নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী ড্যানিশ খাবার পরিবেশন করা হয়।


ফ্রান্স:


ফ্রান্সের এক ছোট্ট গ্রামের নাম ভ্যালেনটাইন। এ গ্রামটি ১৪ ফেব্রুয়ারি সেজে ওঠে দারুণভাবে। প্রতিটি বাড়ি গ্রিটিংস কার্ড, ভালোবাসার বার্তা, প্রেমের প্রস্তাব লেখা চিরকুটে সাজিয়ে তোলা হয়। লতাপাতা, ফুলও থাকে সেই অন্দরসজ্জায়। বাড়ির বাগানও সাজানো হয় একইভাবে।


জাপান:


জাপানে ১৪ ফেব্রুয়ারি কোনো উপহার দেওয়া যায় পছন্দের মানুষকে। তবে তিনি তা ফিরিয়ে দিতে চাইলে তাকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সেদিন দেশটিতে ‘হোয়াইট ডে’ উদযাপন করা হয়। এ দিনটি ভ্যালেন্টাইনস ডে-এর এক মাস পূর্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এ সময়ের মধ্যে একজন তাঁর পছন্দের মানুষের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে কার্ড বা চিঠি বিনিময় করেন। উপহার এবং কার্ড বিনিময় ছাড়াও হোয়াইট ডে উৎসবে সাধারণত রোমান্টিক ডিনার, একসঙ্গে আতশবাজি দেখার মতো কার্যকলাপ অন্তর্ভুক্ত থাকে।


জার্মানি:


আপনি জার্মান ক্লাসরুমে আকর্ষণীয় ক্ষুদ্র হৃদয়-আকৃতির কার্ড পাবেন না। ক্রস-কালচারাল ট্রেইনার এবং প্রোটোকল অ্যান্ড এটিকেট ওয়ার্ল্ডওয়াইডের প্রতিষ্ঠাতা শ্যারন শোয়াইতজার বলেন, ‘জার্মানিতে কেবলমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ভালোবাসা দিবস নির্ধারিত। এটি যথাযথভাবে পূর্ণবয়স্কদের একটি বিষয়।’ আপনি দিনটিতে রোমান্সের জন্য অনেক শূকর দেখতে পাবেন, কারণ পশুটি ভাগ্য ও যৌনকামনার প্রতীক। দম্পতি বা প্রেমিক-প্রেমিকারা একে অপরকে শূকরের মূর্তি ও ছবি উপহার দেয়, এমনকি শূকর আকৃতির চকলেটও। যেখানে আমেরিকানরা ভালোবাসা দিবসে ডেজার্ট হিসেবে চকলেট পছন্দ করে, সেখানে জার্মানরা রোমান্টিক বার্তাযুক্ত হৃদয়-আকৃতির জিনজার কুকিতে কামড় বসায়।


দক্ষিণ কোরিয়া:


যুক্তরাষ্ট্রে ভালোবাসা দিবসে বেশিরভাগ উপহার পুরুষেরা দিয়ে থাকে, কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়াতে এর বিপরীতটাই সত্য- এখানে নারীরা তাদের পুরুষ সঙ্গীদের চকলেট উপহার দেয়। এক মাস পর হোয়াইট ডে-তে পুরুষেরা ক্যান্ডি প্রদান করে এই শুভেচ্ছা রিটার্ন করে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়- কখনো কখনো সিঙ্গেল ফ্রেন্ডরা ব্ল্যাক ডে-তে (১৪ এপ্রিল) ব্ল্যাক নুডলস খাওয়ার জন্য একত্রিত হয়।


চীন:


চীনে ভালোবাসা দিবস দিনকে দিন আরে জনপ্রিয় হচ্ছে, কিন্তু সেখানে কিশি ফেস্টিভ্যালকে প্রায়ক্ষেত্রে চাইনীজ ভ্যালেন্টাইন’স ডে বা চৈনিক ভালোবাসা দিবস বলা হয়, যা চৈনিক দিনপঞ্জি অনুসারে সপ্তম চান্দ্রমাসের সপ্তম দিনে উদযাপন করা হয়- যা সাধারণত আগস্টে পড়ে। এ দিনে ঐতিহ্যগতভাবে নারীরা ভালো স্বামী পাওয়ার জন্য অথবা সেলাই দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রার্থনা করে। বর্তমানে চৈনিক ভালোবাসা দিবসের সঙ্গে পাশ্চাত্য ভালোবাসা দিবসের অনেক মিল রয়েছে।


পেরু:


ভালোবাসা দিবসে পেরুভিয়ানরা গোলাপের পরিবর্তে সাধারণত অর্কিড উপহার দেয়। সেখানে এ দিনটি বিয়ে করার জন্য জনপ্রিয়, এ সময় গণবিয়ে সম্পাদিত হয়।


চেক প্রজাতন্ত্র:


চেক প্রজাতন্ত্রে ভালোবাসা দিবস সাধারণত টিপিক্যাল রোমান্টিক ডিনার এবং গোলাপ ও চকলেট গিফট করার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। কিন্তু সেখানকার প্রধান ভালোবাসা দিবস হচ্ছে পয়লা মে, যখন কাপলরা সুখ ও ভালো স্বাস্থ্যের উদ্দেশ্যে চেরি গাছের নিচে চুমু খায়।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com