ফরিদপুরের বড় গরুগুলোর মধ্যে একটির নাম ‘ফরিদপুরের ডন’। ৪০ মণ ওজনের গরুটি এলাকায় বিক্রি করতে না পেরে এর মালিক রুবায়েত হোসেন ঢাকার গাবতলীর পশুর হাটে নিয়েছিলেন। দাম চেয়েছিলেন ২৫ লাখ। গতকাল বুধবার (২৮ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি গরুটি ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। তবে ক্রেতার নাম বলতে রাজি হননি তিনি।
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের হরেরকান্দি গ্রামের রুবায়েত হোসেন দুই বছর আগে ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরুটি ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে আনেন। তিনি গরুটিকে একটি ঘরের মধ্যে রেখেই লালন-পালন করেন। দুই বছরের মধ্যে এক দিনের জন্যও গরুটিকে ঘরের বাইরে আনেননি। অর্থাৎ দুই বছর ধরে একটি ঘরের মধ্যেই গরুটিকে কোরবানির হাটে তোলার জন্য প্রস্তুত করা হয়। জুন মাসের শুরুর দিকে তিনি ঘর ভেঙে গরুটিকে বাইরে আনেন। তখন সেটিকে দেখতে অনেক মানুষ ভিড় জমায় রুবায়েতের বাড়িতে।
গরুটির মালিক রুবায়েতের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফরিদপুরের ডনের উচ্চতা ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং লম্বায় ১২ ফুট ২ ইঞ্চি। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে গরুটিকে। তিনি নিজে নেপিয়ার সবুজ ঘাস চাষ করে গরুকে খাইয়েছেন। পাশাপাশি ছোলা, ভূষি, কমলা, মাল্টা, আঙ্গুর ও কলা ছিল গরুটির প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়।
তিনি বলেন, এলাকায় গত এক মাসে অনেকেই গরুটিকে দেখতে এসেছেন। এদের মধ্যে যারা ক্রেতা ছিল তারা এর দাম বলেছেন ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। যার অনেক বেশি টাকা গরুটির পেছনে খরচ হয়েছে।
রুবায়েত বলেন, গত ২২ জুন গরুটিকে একটি ট্রাকে করে ঢাকার গাবতলী হাটে নিই। নেওয়ার পর অনেকেই দাম-দর করছেন। সর্বোচ্চ ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছিল। আমি দাম চেয়েছিলাম ২৫ লাখ টাকা। ২০ লাখের নিচে বিক্রির ইচ্ছা ছিল না। তবে শেষ মুহূর্তে দাম কমায় ১০ লাখে বিক্রি করতেই বাধ্য হয়েছি।
তিনি বলেন, এত বড় একটা গরুকে ট্রাকে করে এতদূর নিয়ে আসা অনেক কষ্টকর। আশা ছিল কিছু বেশি দামে বিক্রি হবে। তবে বাড়িতে গরুটির দাম ১২ লাখ উঠেছিল। এখন লোকসানে বিক্রি করতে হলো।
মাঝারদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আফছারউদ্দিন মাতুব্বর বলেন, গরুটিকে লালন পালন করতে অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় করেছেন রুবায়েত। অনেক মানুষ গরুটিকে দেখতেও এসেছেন। যতদূর জানতাম গরুটি তিনি বাড়ি থেকেই বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। তবে এই এলাকায় এতবড় গরুর ক্রেতা পাওয়া দুষ্কর। এজন্য বাধ্য হয়েই তাকে ঢাকার হাটে গরুটিকে বিক্রি করতে হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এস আসজাদ বলেন, ফরিদপুরের ডন জেলার হাতেগোনা বড় দুই একটি গরুর মধ্যে একটি। গরুটি ঢাকায় নেওয়ায় মালিক এর ন্যায্যমূল্য পাবেন বলে আমরা আশাবাদী ছিলাম।
তিনি বলেন, জেলায় প্রায় ৭ হাজার খামারে প্রায় দেড় লাখ গরু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয়েছে।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]