নামাজি ব্যক্তির সামনে দিয়ে চলাফেরা করা নিষেধ। এ ব্যাপারে হাদিসে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো নামাজির সামনে দিয়ে অতিক্রম করে, সে যদি জানত (এর গুনাহ কিংবা শাস্তি কতটা ভয়াবহ)— তাহলে নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে এ পদক্ষেপের তুলনায় তার কাছে একশত বছর দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম মনে হতো।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস, ৯৪৬; কানজুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদিস, ১৯২৫২)
তবে বিশেষ কারণে নামাজির সামনে দিয়ে চলাফেরা করতে হলে সুতরা ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য সুতরা ব্যবহার করা জরুরি।
সুতরা একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো আড়াল। নামাজি ব্যক্তির সামনে এক হাত পরিমাণ লম্বা একটি বস্তু রাখতে হয়, যা তার সামনে দিয়ে চলমান সবকিছু থেকে তাকে হেফাজত করবে-এটাই হলো শরিয়তের পরিভাষায় সুতরা। সুতরা হিসেবে লাঠি, কাঠি, খুঁটি ইত্যাদি স্থাপন করা হয়। বর্তমানে বাজারে কাঠ ও প্লাস্টিকের সুতরা পাওয়া যায়। সুতরা সাধারণত এক হাত লম্বা এবং এক আঙুল পরিমাণ মোটা হওয়া উচিত।
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, তাবুকের যুদ্ধকালে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে মুসল্লির সুতরা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। তিনি বললেন, তা হাওদার পেছনের কাঠটির মতো (মুসলিম : ৯৯৭)। হাওদার কাঠটির ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে আতা বিন আবি বরাহ (রা.) বলেন, হাওদার খুঁটির পরিমাণ এক হাত বা তার চেয়ে একটু বেশি। (আবু দাউদ : ৬৮৬)
সুতরা নামাজির সামনে ডান দিকে কিংবা বাম দিকে একটু সরিয়ে স্থাপন করতে হয়। হাদিসে এভাবে স্থাপন করার কথা বলা হয়েছে। (ইযাহুল মুসলিম : ২/৩৯৭)
জামাতে নামাজ পড়ার সময় ইমামের সামনে সুতরা থাকলে তাই ইমাম-মুসল্লি সবার জন্য যথেষ্ট হবে। মুসল্লিদের জন্য আলাদা করে আর সুতরা ব্যবহারের দরকার নেই। এ ব্যাপারে সব ফকিহ একমত (ইযাহুল মুসলিম : ২/৪০০)।
সজিদের প্রশস্ততা ৪০ হাতের বেশি হলে মসজিদে নামাজরত ব্যক্তির দুই কাতার সামনে দিয়ে অতিক্রম করা জায়েজ আছে। আর ছোট মসজিদ হলে নামাজি ব্যক্তির সামনে দিয়ে সুতরা ছাড়া অতিক্রম করা জায়েজ নেই। রুমাল বা জায়নামাজ সুতরা হিসেবে ব্যবহার করা সঠিক নয় (আল-বাহরুর রায়েক : ২/১৭; বাদায়েউস সানায়ে : ১/৫০৯)।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]