জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের করা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে একজন উপদেষ্টা ও ১০ সদস্যের উপদেষ্টাবিশিষ্ট নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তবে তাদের সাত দফা দাবির বেশ কিছু দাবি মানা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকারি দলের মুখপাত্র সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বুধবার দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ শেষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা জানান।
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট দ্বিতীয় দফা সংলাপে গণভবনে এসে লিখিতভাবে উপদেষ্টাবিশিষ্ট নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব দেয়। এছাড়া সংসদ ভেঙে দেয়া, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির বিষয়ে সরকার ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট একমত হতে পারেনি।
কাদের বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন চায়। কিন্তু এটা হলে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে পারে বলে তাদের জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাদের সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন। নির্বাচন পেছানোর কথা না বলতে ঐক্যফ্রন্টকে আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, নির্বাচন পিছিয়ে দিতে এটা তাদের বাহানা। কিন্তু আমরা সংবিধানের বাইরে যাবো না। নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই। গত সাত দিনে যত সংলাপ হয়েছে সেসব বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবেন।
তিনি আরো বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ও ১০ জন সদস্যবিশিষ্ট নির্দলীয় উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের প্রস্তাব মানা হবে না, কারণও নেই।
সংলাপে আমাদের মধ্যে মন খুলে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, তারা আজকে যে দাবিগুলো নিয়ে এসেছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে, সে বিষয়ে তার ঐকমত্য চান। নিশ্চয়তা চান।
তিনি বলেন, এছাড়া তারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও রাজবন্দিদের মুক্তি চেয়েছেন। এ বিষয়ে তাদের দাবি মেনে নিতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। সেনাবাহিনীর মেজিস্ট্রেসি পাওয়ার নিয়ে তারা যা বলেছেন, তা আমাদের দেশে চালু নেই। তবে সেনাবাহিনী টাস্কফোর্স হিসেবে থাকবে, স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত থাকবে।
তারা বেগম জিয়ার মুক্তি ওইভাবে চাননি, জামিন চেয়েছেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা বলেছি- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালে এ মামলা করেছে। এটি আগেই নিষ্পত্তি করা যেত, কিন্তু তারা দেরি করেছেন। এখন আদালত তাকে দণ্ড দিয়েছেন। তারা আদালতের কাছে জামিন চাইতে পারেন, আদালত যদি তাদের জামিনে মুক্তি দেয়, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে, আলোচনাও এগিয়ে যাবে, তবে সংলাপ শেষ বলে স্পষ্ট জানিয়ে কাদের বলেন, তাদের সাত দফার অধিকাংশ দাবি মেনে নিতে আমাদের নেত্রী সম্মত হয়েছেন। তবে তারা এমন কিছু নিয়ে এসেছেন, সেগুলো নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার একটি বাহানা।
সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, তারা আরো দাবি উপস্থাপন করেছেন। আমরা বলেছি, সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারিনি। তারা আরো সংলাপেরও দাবি জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর অপর সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, সংবিধান পরিপন্থী ও সাংঘর্ষিক কিছু বক্তব্য তারা নিয়ে এসেছেন, যেটা গ্রহণযোগ্য নয়। সংলাপ এখানে শেষ। শিডিউল ঘোষণার পর তারা যদি কোনো ব্যাপারে আবার বসতে চান, আপত্তি নেই।
বিবার্তা/জাকিয়া
>>সংলাপ শেষ, নির্দলীয় উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের প্রস্তাব ঐক্যফ্রন্টের
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]