শিরোনাম
যশোরে তরিকুলের জানাজায় মানুষের ঢল
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০১৮, ১৯:০৫
যশোরে তরিকুলের জানাজায় মানুষের ঢল
যশোর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের দশ জেলার নেতাকর্মী ও যশোরের সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ভালোবাসায় চিরবিদায় নিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম।


সোমবার বাদ আসর শহরের ঈদগাহে তার শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় এক লাখ মানুষের সমাগম ঘটে। জানাজা শেষে সর্বস্তরের মানুষ ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শহরের কারবালা কবরস্থানে বাবা মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।


জানাজার আগে মরহুম তরিকুল ইসলামের কফিন বিএনপির দলীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এরপর বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।


জানাজায় পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন তরিকুল ইসলামের বড় ছেলে শান্তুনু ইসলাম সুমিত, ছোট ছেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।


বাবার জন্য দোয়া চেয়ে শান্তুনু ইসলাম সুমিত বলেন, আমার বাবা মানুষের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করেছেন। কাজ করতে গিয়ে যদি কোনো ভুল বা কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকেন, আপনার ক্ষমা করে দেবেন। আপনাদের কাছে আমি হাতজোড় করে বাবার জন্য ক্ষমা চাইছি। আমার বাবার কাছে কারো কোনো পাওনা থাকলে আমরা শোধ করে দেবো। আপনারা আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।


তিনি আগামী বুধবার বাদ আসর নিজ বাস ভবনে দোয়া মাহফিলে সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানান।


অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তার বক্তব্যে বলেন, আমার বাবা আপনাদের সমর্থনে চারবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। চারবার মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে আপনাদের কল্যাণে কাজ করেছেন। জিয়াউর রহমানের জাতীয়বাদী আদর্শ ধারণ করেছেন আমৃত্যু। আমিও যেন বাবার মত আপনাদের পাশে থাকতে পারি। বাবা যদি ভিন্ন রাজনৈতিক দলের কারণে কারো কষ্ট দিয়ে থাকেন, তার জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। আমার বাবা কখনো মানুষে মানুষে বিভেদ করেনি। সর্বস্তরের মানুষ বাবাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন, এজন্য পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ।


তিনি আরো বলেন, জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় স্পিকারের উপস্থিতিতে জানাজা হয়েছে। সেখানে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন উপস্থিত ছিলেন। এজন্য তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমার বাবা যখন অসুস্থ ছিলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা খোঁজ নিয়েছেন, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনারা আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।


জানাজায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, তরিকুল ইসলাম আমৃত্যু এ অঞ্চলের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। আপনাদের প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন। তিনি যশোর উন্নয়নের কারিগর। দলের নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। তার জন্য সবাই দোয়া করবেন।


জানাজা শেষে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও যশোর জেলার বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।



এর আগে বেলা আড়াইটায় হেলিকপ্টারযোগে মরদেহ যশোর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় তরিকুল ইসলামের মরদেহ। সেখান থেকে নেওয়া শহরের ঘোপ এলাকার নিজবাস ভবনে। সেখানে তাকে এক নজর দেখার জন্য শত শত নেতাকর্মী ভিড় করে। পরে মরদেহ শহরের লালদিঘিপাড়ে দলীয় কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণ রাখার পর ঈদগাহ ময়দানে আনা হয় কফিন।


তরিকুল ইসলামকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে যশোরে হাজির হন খুলনা বিভাগের দশ জেলার বিভিন্নস্তরের নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের ঢল নামে যশোর শহরে। প্রায় এক লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে বলে দলীয় নেতাকর্মীদের দাবি। বিপুল সংখ্যক মানুষের শ্রদ্ধা ভালবাসায় দক্ষিণবঙ্গের প্রভাবশালী বিএনপি নেতা চিরবিদায় নিলেন। দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। এছাড়াও যশোর জিলা পরিষদ, যশোর পৌরসভার পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।


বিবার্তা/তুহিন/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com