শিরোনাম
খালেদাকে বন্দী রেখে সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না: ফখরুল
প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:১৯
খালেদাকে বন্দী রেখে সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না: ফখরুল
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে ফলপ্রসূ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার এক মানববন্ধনে তিনি বলেছেন, 'খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না। এতে সরকারের সংলাপের আন্তরিকতা প্রমাণ করে না।'


বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন দলটির নেতাকর্মীরা। এই কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক করে রেখেছে। জামিন পেলেও তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। সেই মামলার সাজা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এমতাবস্থায় খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না।’


বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একদিকে সরকার সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়েছে, অন্যদিকে খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছে। এ দুটি একে অপরের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এতে সংলাপের আন্তরিকতা প্রমাণ করে না।’


সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি সত্যিই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চান, তাহলে সাত দফা দাবি পুরোপুরি মেনে নিতে হবে। সবার আগে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তার মুক্তি ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন অর্থবহ হবে না।'


মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে এবং আসন্ন নির্বাচনে যাতে অংশ নিতে না পারে, সে জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে সাজা দিয়ে কারাগারে আটক রেখেছে। জামিন পেলেও তাঁকে জামিন দেওয়া হয়নি। একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। আজকে এ থেকেই প্রমাণিত হয়, একদিকে সরকার সংলাপের আমন্ত্রণ পাঠিয়েছে, অন্যদিকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি করা—এ দুটো সাংঘর্ষিক। এটা কখনোই গণতান্ত্রিক কোনো আচরণের প্রতিফলন ঘটায় না। এতে সংলাপের যে আন্তরিকতা, সে আন্তরিকতা প্রমাণ করে না।


ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপি আন্দোলন করছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এই বয়সে অসুস্থ অবস্থায় কারাবরণ করছেন শুধু গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলন করার জন্য। আমরা সরকারকে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি এই গণতন্ত্রের জন্য। আজকে এই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে যারা আত্মাহুতি দিয়েছে, তাদের রক্তের বিনিময়ে ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে কোনো সংলাপ বা নির্বাচন ফলপ্রসূ হবে না।’


সরকারকে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন। নির্বাচন দিচ্ছেন… কিন্তু সেই নির্বাচনে একতরফাভাবে হেলিকপ্টারে করে জনগণের কাছে যাচ্ছেন আর আমাদের নেত্রী কারাগারে, আমরা পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি, আমাদের কর্মীরা দাঁড়াতে পারছে না। এ অবস্থায় কখনো সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হতে পারে না। সে জন্য আমরা বলেছি, আমাদের সাত দফা দাবি পুরোটাই মেনে নিতে হবে। সবার আগে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বাতিল করতে হবে এবং নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করে অবাধ নির্বাচন দিতে হবে। জনগণের চাহিদা পূরণ করতে হবে। ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না। সর্বপ্রথম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তাঁর মুক্তি না হলে কোনো নির্বাচন অর্থবহ হবে না।’


বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে সরকারের করায়ত্ত হয়ে গেছে দাবি করে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘সাবেক বিচারপতি এস কে সিনহা সাহেব বলে গেছেন, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে সরকারের করায়ত্ত। এখানে বিচার বিভাগের কোনো স্বাধীনতা নেই। এ জন্য তাঁকে জোর করে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’


মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সরকার খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে বাদ দিয়ে ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু বিএনপিকে ছাড়া কোনো নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না, হতে দেওয়াও হবে না।’



জাতীয় ঐক্যফ্যন্টের সাত দফা দাবি মেনে নিয়ে একটি অবাধ নির্বাচনের আয়োজন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তা না হলে সৃষ্ট অরাজকতার জন্য অস্থিতিশীলতার জন্য সরকার দায়ী থাকবে।’


মানববন্ধনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাজাহান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, রুহুল আলম চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/হাসান/কামরুল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com