'ভোট হলে তো গুরুত্ব থাকবে না, নির্বাচনের ঘোষণায় তারা নাখোশ'
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৫, ২১:৪৯
'ভোট হলে তো গুরুত্ব থাকবে না, নির্বাচনের ঘোষণায় তারা নাখোশ'
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ভোট হলে যাদের আর গুরুত্ব থাকবে না, তারাই এখন ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের ঘোষণায় নাখোশ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।


জামায়াতে ইসলামীর দিকে ইংগিত করে বুধবার (১৮ জুন) দলের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।


মির্জা ফখরুল বলেন, “এখন নির্বাচন নাই সুতরাং তাদের অনেক গুরুত্ব আছে। যেই নির্বাচন হয়ে যাবে, জনগণের যারা ভালোবাসার দল, তারাই তো ক্ষমতায় আসবে, তাই না? তখন তাদের গুরুত্ব কতটুকু থাকবে কি থাকবে না… তখন নির্ধারিত হবে। যে কারণে ওরা নারাজ হইছে এবং নারাজ হয়ে গতকালকে একটা বৈঠকে ওরা হাজির হয় নাই।


যুক্তরাজ্য সফরে গিয়ে গত শুক্রবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকের পর এক যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালে রোজা শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।


বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছিল। অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টা ঈদের আগের দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এপ্রিলের কথা বলেছিলেন। এই টানাপড়েনের মধ্যে লন্ডনের বৈঠকে দুই পক্ষ মাঝামাঝি একটি অবস্থানে আসায় বিএনপি স্বস্তি প্রকাশ করেছে।


তবে জামায়াতে ইসলামী এর তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর ‘যৌথ বিবৃতি’ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়েছে’ ।


আর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেছেন, বিদেশের মাটিতে নির্বাচন নিয়ে ব্ঠৈক করে ‘দেশকে পেছনের দিকে’ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।


জামায়াতের প্রতিক্রিয়া কেবল বিবৃতির মধ্যে থেমে থাকেনি। মঙ্গলবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকও ‘বয়কট’ করে দলটি। তাদের অভিযোগ, সরকারপ্রধান যেভাবে একটি দলের সঙ্গে মিলে যৌথ ঘোষণা দিলেন, তা ‘ঠিক হয়নি’।


সেই প্রসঙ্গ ধরে মির্জা ফখরুল বুধবার ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আমরা বলেছিলাম ডিসেম্বরে নির্বাচনে যেতে হবে। আর ইউনূস (মুহাম্মদ ইউনুস) সাহেব বলেছিলেন এপ্রিলে ইলেকশন দেবেন, তাই না? তিনি (তারেক রহমান) আলোচনার মধ্য গিয়ে ওই ডিসেম্বরে থাকেননি। তিনি কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে চলে গেছেন এবং ইউনূস সাহেবও পিছিয়ে ফেব্রুয়ারিতে এসেছেন। এটাকেই বলে রাষ্ট্রনায়কোচিত নেতা।


“রাষ্ট্রনায়ক জনগণের শান্তির কথা চিন্তা করে, কোনো বিভেদ-বিভাজনে না গিয়ে, কোনো সংঘর্ষে না গিয়ে এই দুই নেতা (মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান) আমাদেরকে একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সুযোগ করে দিয়েছেন। এটা অনেকের পছন্দ হয় নাই, অনেকের পছন্দ হয় নাই। কারণ নির্বাচনে হলেই তাদের বিপদ।”


তিনি বলেন, “আমরা রাজনৈতিক দল, আমাদের কাজ কি? জনগণের কাজ করা। আমাদের কাজ হচ্ছে জনগণ যেন শান্তিতে থাকে, জনগণ যে শিক্ষা ব্যবস্থা পায়, তাদের ছেলে-মেয়েরা যেন লেখাপড়া করতে পারে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যেন তারা চিকিৎসা পায়, পাস করে বের হলে যেন চাকরি পায়। একটা উন্নত জীবনযাপন করতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।”


জনগণের কাজ করার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা কর্মসূচিও তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।


বুধবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় মহানগর উত্তরে বিএনপির সদস্য নবায়ন ও প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ অভিযান কর্মসূচি উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি।


তুরাগ থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ন হারুন রশিদ খোকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এসএস জাহাঙ্গীর, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এম কফিল উদ্দিন, আফাজ উদ্দিন, এবিএম আব্দুর রাজ্জাক বক্তব্য দেন।


বিবার্তা/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com