সংকোচিত হয়েছে নির্যাতিতদের প্রতিকারের পথ: বাংলাদেশ ন্যাপ
প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২৪, ১৫:০২
সংকোচিত হয়েছে নির্যাতিতদের প্রতিকারের পথ: বাংলাদেশ ন্যাপ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বাংলাদেশে নির্যাতিত মানুষের আইনগত প্রতিকারের পথ ক্রমান্বয়ে সংকোচিত হয়েছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, যুগে যুগে মানুষ বিভিন্ন দেশের স্বৈরশাসক, নিষ্ঠুর একনায়ক এবং একদলীয় শাসনের দ্বারা মানুষ নির্যাতিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। এখনও বিশ্বব্যাপী কোনো না কোন অঞ্চলে ভাষা, বর্ণ, জাতি ও সম্প্রদায় নিয়ে চলছে হিংসা-যুদ্ধ। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যাগুরুরা সংখ্যালঘুদের ওপর চালাচ্ছে অমানবিক নির্যাতন। রাজনৈতিক ভিন্ন মতের মানুষদের নিশ্চিহ্ন করতে অসহিষ্ণু স্বৈরশাসক কিংবা হিংসাকাতর অগণতান্ত্রিক দল চালাচ্ছে নির্দয় অত্যাচার।


২৫ জুন, মঙ্গলবার নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব কথা বলেন।


তারা বলেন, বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে সকল শাসকগোষ্ঠীই জনগণের ওপর এখন ফ্যাসিবাদী জুলুম চালিয়েছে এবং চালাচ্ছে। আর এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কারণে গুম, কথিত বন্দুক যুদ্ধে হত্যা, শারীরিক নির্যাতনে মৃত্যুর শিকার হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। যেহেতু শাসকগোষ্ঠীর জনগণের জবাবদিহিতা নেই, সেহেতু গণতান্ত্রিক সকল প্রতিষ্ঠানকে হাতের মুঠোয় নিয়ে অপশাসনের জগদ্দল পাথর জনগণের বুকের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে বার বার। গণমাধ্যমকে হুমকি ও ভয় দেখিয়ে এবং নির্যাতন করে কব্জা করার অপচেষ্টা চলছে।


ন্যাপ নেতৃদ্বয় বলেন, জাতিসংঘের নির্যাতন ও অন্য নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তি বিষয়ক কনভেনশনে অন্তর্ভুক্তির সময় বাংলাদেশ ঘোষণা করে, দেশের বিরাজমান আইন ও বিধানের সাথে সংগতি রেখে ১৪ অনুচ্ছেদের ১ উপধারা অনুযায়ী প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্র নিজ দেশের আইনগত প্রক্রিয়ায় নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তার উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের প্রতিকার প্রাপ্তি এবং ন্যায্য ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের একটি প্রয়োগযোগ্য অধিকার যেখানে যতটা সম্ভব ততটা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।


তারা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ঘোষণা অনুযায়ী দেশের মালিক জনগণ। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অঙ্গীকার ছিল বৈষম্য-শোষণ, বঞ্চনা ও নির্যাতনমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা। বাংলাদেশ বর্তমানে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হলেও নির্যাতিত মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া তথা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিকারে ও প্রতিরোধে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হচ্ছে।


নেতৃদ্বয় বলেন, আমাদের সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদে, জাতিসংঘের সর্বজনীন ঘোষণার ৫ ধারায় নির্যাতনকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু নির্যাতনই নয়, কারও প্রতি নিষ্ঠুর কিংবা অবমাননাকর কোন আচরণ করা যাবে না বলেও এই ধারায় স্পষ্ট উল্লেখ আছে। নির্যাতন ফৌজদারি আইনেও একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। দেওয়ানী আইনে নির্যাতিতদেরকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য।


নির্যাতনের ফলে একজন ব্যক্তি দৈহিকভাবে পঙ্গু হয়, মানসিকভাবে কাজের উৎসাহ হারিয়ে ফেলে; অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়, মৃত্যুর শিকার হয়, সমাজে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে, ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব লোপ পায়; নির্যাতিত ব্যক্তি পরিবার ও সমাজের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়, নির্যাতন সর্বোপরি উন্নয়নের পথে বাঁধা এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকিস্বরূপ। কিন্তু তারপরও আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত নানাভাবে নির্যাতন অব্যাহত আছে।


তারা বলেন, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, শাস্তি এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে বর্তমান সরকার জাতিসংঘের নির্যাতন প্রতিরোধে তাদের অঙ্গীকার পূরণ করবে বলে দেশবাসী প্রত্যাশা করে। নির্যাতিতদের সমর্থনে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক সংহতি দিবসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকার জনপ্রত্যাশা পূরণ করবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। একই সঙ্গে দায়মুক্তির সংস্কৃতি থেকেও এই সরকার বেরিয়ে আসুক এমনটাই চায় দেশবাসী।


বিবার্তা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com