যারা ষড়যন্ত্রের ক্রীড়ানক হিসেবে কাজ করছেন, তাদের কাউকে রেহাই দেয়া হবে না : হানিফ
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:৫৭
যারা ষড়যন্ত্রের ক্রীড়ানক হিসেবে কাজ করছেন, তাদের কাউকে রেহাই দেয়া হবে না : হানিফ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বিদেশি ষড়যন্ত্রের ক্রীড়ানক হিসেবে যারা কাজ করছেন তাদের কাউকে রেহাই দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।


তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা লাফালাফি করে ভাবছেন তাদের বিদেশি প্রভুরা এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দিবে। আর এটাই তাদের বড় প্রাপ্তি হবে। বিদেশি ষড়যন্ত্রের ক্রীড়ানক হওয়ার দরকার নেই। বিদেশি শক্তির ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে লাফালাফি করবেন না। আওয়ামী লীগ আবারো নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসবে। তখন আপনাদের এই সমস্ত ষড়যন্ত্র, প্রত্যেকটা অপকর্মের বিচার আবারো নতুন করে করা হবে। কাউকে রেহাই দেয়া হবে না। আজকে যারা আস্ফালন দিয়ে কথা বলছেন নির্বাচনের পরে এদের কার কী অবস্থান আছে সেটা দেখা হবে।


শুক্রবার (৬ অক্টোবর) চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।



মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি গতকাল তথাকথিত রোডমার্চ করেছে। খবরে দেখলাম তারা আবার আল্টিমেটাম দিয়েছে। এই আল্টিমেটাম নতুন না। আল্টিমেটামের কথা শুনলে ২০১২ সালে ফিরে যেতে হবে। ২০১২ সালে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছিল, এতিমের টাকা আত্মসাতের কারণে বেগম খালেদা জিয়ার বিচার চলছিল তারা বুঝতে পেরেছিল তাকে নির্দোষ প্রমাণ করা যাবে না। আর তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও খালেদা জিয়ার বিচার বন্ধ করার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিল। তারা দেশের আইন, বিচার ব্যবস্থা মানে না।


তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ২০১৩ সালে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সরকার পতন ছাড়া ঘরে ফিরবেন না। আজ '২৩ সাল। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এখনো রাষ্ট্রক্ষমতায়, প্রধানমন্ত্রী। যিনি আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন তিনি আজ কোথায়? এতিমের টাকা আত্মসাত মামলায় দণ্ডিত হয়ে জেলখানায় ছিলেন। শেখ হাসিনার দয়ায়, কৃপায় বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।


আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, বিএনপি গত এক বছর ধরে প্রতিদিন আল্টিমেটাম দিচ্ছে। এই সরকারকে নাকি আর জনগণ চায় না। আপনাদের চায়? আপনারা কারা? দেশবাসী দেখেনি। আপনাদের এক নেতা খালেদা জিয়া এতিমের টাকার লোভ সামলাতে না পারায় আদালত কর্তৃক দণ্ডিত কয়েদি আর আরেক নেতা মহান নেতা তারেক রহমান চুরি, মানি লন্ডারিং, হত্যা, সন্ত্রাসের দায়ে শুধু যাবজ্জীবন নয়, সিঙ্গাপুরে মানি লন্ডারিং মামলায় ৭ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে পলাতক। একটা চোর, সন্ত্রাসী, খুনি তাকে নাকি দেশবাসী চায়। লজ্জাও হয় না তাদের। আমরা জানি আপনাদের লজ্জাবোধ নেই।


বিএনপি নেতারা বলছেন, আমরা আবার মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছি। আজ রাজাকারের শাবকরা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে। তাদের মুখে মুক্তিযুদ্ধের গল্প বেমানান। আমরা জাতির পিতার নেতৃত্বে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি রাজাকার শাবকদের তর্জন-গর্জন শোনার জন্য নয়, বলেন হানিফ।


বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে দেশের জন্য কী উন্নয়ন করেছে তার একটা উদাহরণ দেওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, কী কারণে দেশবাসী আপনাদের ওপর আস্থা রাখবে? ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর কী উন্নয়ন করেছেন? আপনাদের উন্নয়নের মধ্যে ছিল দুর্নীতিতে বাংলাদেশকে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। তাদের এই 'সফলতা' ছিল স্বীকার করি। দেশকে জঙ্গিবাদের রাষ্ট্র বানিয়েছিল। দেশের ৫০০ স্থানে সিরিজ বোমা হামলা বানিয়ে দেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানিয়েছিলেন। সন্ত্রাসীদের চারণভূমি বানিয়েছিলেন। ট্রাক-ট্রাক অস্ত্র রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাসীদের দিয়েছিলেন। এমন সব উন্নয়ন করেছিলেন। লজ্জা হয় না আপনাদের?



মার্কিন ভিসানীতির কারণে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা ভীত- এমন বক্তব্যের জবাবে হানিফ বলেন, মার্কিন ভিসা নীতি কাদের জন্য? যারা নির্বাচনে বাধাগ্রস্ত, অনিয়ম করবে, কারচুপি করবে তাদের জন্য। আমরা বলেছি সরকারের অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। ফলেই ভিসা নীতি আমাদের ওপর কার্যকর হওয়ার সুযোগ নেই। যারা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চান তারা সাবধান হয়ে যান। নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে বিপদে পড়বেন।


একাত্তরের রাজাকারদের বংশধরদের দেশের উন্নয়ন পছন্দ হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সারাদেশে যে উন্নয়ন করেছেন- ঢাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল, মিরসরাইয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের মতো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন এসব উন্নয়ন দেখে তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। দেশের মানুষ উন্নয়নের পক্ষে, শান্তির পক্ষে, অগ্রগতির পক্ষে।


বিএনপির দিকে দেশের জনগণ আর মুখ ফিরিয়ে তাকাবে না উল্লেখ করে হানিফ বলেন, নির্বাচনে অংশ নিলে ভরাডুবি ছাড়া আর কিছু নেই। তাই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না। ক্ষমতায় থাকতে লুটপাট, সন্ত্রাস করেছে। আবার ক্ষমতার বাইরে থাকতে পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, বাসে-ট্রেনে মানুষ পুড়িয়ে জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।


তারা জানে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই, কখনো নির্বাচিত হতেও পারবে না। আন্দোলন-আন্দোলন খেলা বন্ধ করুন। নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রমাণ করুন জনগণ কার পক্ষে আছে, বলেন তিনি।


দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে থাকার আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন হওয়ার সম্ভবনা আছে। সবাই মাঠে নেমে পড়ুন। বিজয় সুনিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারো ক্ষমতায় আসবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) জরিপ করে দেখেছে দেশের ৭০ ভাগ মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে, এই সরকারের পক্ষে। তাকে কিভাবে হারানো যাবে? কোনো ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না।


মীরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি।


সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকসহ চট্টগ্রাম জেলা ও মিরসরাই উপজেলার নেতৃবৃন্দ।


বিবার্তা/সোহেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com