দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে কুখ্যাত তারেক রহমান বাংলাদেশকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নেতারা আন্দোলনের নামে সারা দেশে আগুনসন্ত্রাস চালিয়েছেন। তারা বাস পুড়েছে, সাধারণ মানুষ এবং পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। গত শনিবার তাদের দলের নেত্রী নিপুণ রায় মোবাইলে ফোন করে বলেছেন- ‘বাসে আগুন দিয়ে আমাকে ছবি তুলে পাঠাও। তুমি কি বোঝ না আমি উপরে পাঠাবো? উপরে কোথায় পাঠাবে? সেই তারেক রহমানকে খুশি করার জন্য পাঠাবে।’ কারণ ওই কুখ্যাত তারেক রহমান বাংলাদেশকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে চায়।

আগামী ২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রংপুর আগমন উপলক্ষ্যে রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় নানক এসব কথা বলেন। রবিবার (৩০ জুলাই রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী এবং কেন্দ্রীয় সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়াসহ মহানগর ও জেলার নেতারা।

এ সময় আওয়ামী লীগের এই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখনই এগিয়ে যাচ্ছে তখন সেই চিরচেনা দেশবিরোধী অপশক্তি আবার নতুন করে অগ্নিকাণ্ডে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করে তারা যখন ব্যর্থ হয়েছে তখন তাদের সেই চিরচেনা অগ্নিসন্ত্রাস নিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, বিএনপি নামক দলটির জন্যই হয়েছিল খুনি জিয়ার পকেট থেকে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন এ দেশকে মিনি পাকিস্তানি বানানোর ষড়যন্ত্র করেছিল খালেদা-নিজামীর জোট সরকার। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার ক্ষমতায় এসে দেশে ভোট এবং ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জয়লাভ করেছে। তখন সেই অপশক্তি দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। খুনি জিয়াউর রহমানের পথ অনুসরণ করে ছেলে তারেক রহমান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে গণমানুষের নেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগকে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে। সেই পলাতক তারেক রহমান, সেই লাদেন রহমান ওই লন্ডনের প্রাসাদ বাড়িতে থেকে পরিকল্পনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে- আমি যে দেশে থাকতে পারব না, সেই দেশকে আমি ধ্বংস করে দিব। সে অনুযায়ী শেখ হাসিনার গণতান্ত্রিক সুযোগ ব্যবহার করে তারা মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে।

নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সামনে আমাদের শোকের মাস আগস্ট। এই আগস্ট মাস এলেই ওই রক্তপিপাসুদের রক্তের নেশা জাগে। সে কারণে তারা আবার ঝাঁপিয়ে পড়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচন যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন তারা এই নির্বাচনকে বানচাল করতে চায়। তাই আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নানক বলেন, আগামী ২ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরে আসছেন। তিনি রংপুরের বধূ হিসেবে আসছেন। রংপুর ঐতিহাসিক কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান। কারণ এই রংপুর ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশের প্রবর্তক সজীব ওয়াজেদ জয়ের রংপুর। ১২ বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুর আসছেন। আমরা বিশ্বাস করি- রংপুরে তিনি এলে ১০ লাখ মানুষের সমাগম হবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে নেতাকর্মীদের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।

সভাশেষে বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং সহিংস ঘটনার প্রতিবাদে রংপুরে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।

বিকেলে রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে এই বিক্ষোভ মিছিলটি হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে রংপুর শিল্পকলা একাডেমির সামনে থেকে শুরু হয় প্রেস ক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে বিএনপিকে নৈরাজ্য সহিংসতা অগ্নিসন্ত্রাসের পথে না হেঁটে সোজা পথে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

রংপুর জেলা ও মহানগর নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলার আহ্বায়ক এ কে এম ছায়াদত হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী, জয়নাল আবেদীন ও আনোয়ারুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, রংপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম আহসানুল হক চৌধুরী সদস্যসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা।

বিবার্তা/সোহেল/সউদ