ছাত্র ইউনিয়নের নতুন ঐক্যবদ্ধ কেন্দ্রীয় কমিটির লক্ষ্যে কাউন্সিল অধিবেশনে সংঘর্ষ হয়েছে। পরে আলাদাভাবে কাউন্সিল অধিবেশন করে পৃথক কমিটি ঘোষণা করেছে দুই পক্ষ।
গত ১৬ মার্চ ‘ঐক্যবদ্ধ ৪১তম জাতীয় সম্মেলন’ উদ্বোধন হলেও বিরোধের কারণে সংগঠনটির ঐক্যবদ্ধ কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। সেদিনের অনৈক্য অবসানের ঘোষণা ফলপ্রসূ না হওয়ার পর দীর্ঘ তিন মাস অতিবাহিত হয়।
গতকাল শুক্রবার (৯ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আবারও বসে কাউন্সিল অধিবেশন। সেখানেও পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদের ভাগ নিয়ে কথা-কাটাকাটি থেকে মারামারিতে জড়ায় দুই পক্ষ। ফলে অনৈক্যের অবসানের সেই ঘোষণা আলোর মুখ দেখল না। বিবদমান দুই পক্ষের মারামারিতে পণ্ড হয় ঐক্যের সম্মেলন। এরপর দুই পক্ষ আলাদাভাবে কাউন্সিল অধিবেশন করে পৃথক কমিটির ঘোষণা দেয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা জানান, শুক্রবার কাউন্সিল অধিবেশনে কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটির ৪১টি পদের মধ্যে ২১টি ফয়েজ উল্লাহ ও দীপক শীলপন্থীদের (একাংশের বিদায়ী দুই শীর্ষ নেতা) দিয়ে বাকি ২০টি পদ নিজেরা নিতে চেয়েছিলেন নজির আমিন চৌধুরী ও রাগীব নাঈমপন্থীরা (অন্য অংশের বিদায়ী দুই শীর্ষ নেতা)।
কিন্তু ফয়েজ-দীপকপন্থীরা আরও বেশি পদ দাবি করেন। এ নিয়ে টিএসসি মিলনায়তনে ফয়েজ উল্লাহর সঙ্গে নজির-রাগীবপন্থী অংশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শিমুল কুম্ভকারের মতানৈক্য হয়।
একপর্যায়ে দুই পক্ষ কয়েক দফায় মারামারিতে জড়ায়। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ার পর ফয়েজ-দীপকপন্থীরা পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আগের চেয়ে বেশি পদ দাবি করলে নজির-রাগীবপন্থীরা আলাদা কাউন্সিল অধিবেশন করার জন্য টিএসসি ছেড়ে ডাকসুতে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) চলে যান। এরপর টিএসসিতে ফয়েজ-দীপকপন্থীদের নিজেদের মধ্যেও পদ ভাগাভাগি নিয়ে মারামারি হয়।
১০ জুন, শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো দুটি পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আলাদা কমিটি গঠনের কথা জানায় ছাত্র ইউনিয়নের দুই পক্ষ।
এর মধ্যে ফয়েজ-দীপকপন্থী অংশ দীপক শীলকে সভাপতি, তাসবিবুল গনিকে সাধারণ সম্পাদক ও রেজোয়ান হককে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৪১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
অন্যদিকে রাগীব নাঈমকে সভাপতি, রাকিবুল রনিকে সাধারণ সম্পাদক ও তামজিদ হায়দারকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৪১ সদস্যের আরেকটি কমিটি ঘোষণা করেছে নজির-রাগীবপন্থী অংশ।
ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের নতুন সভাপতি দীপক শীল বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সফল হইনি। একটি অংশ সম্মেলন থেকে ওয়াক-আউট করে। পরে আমরা নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পূর্বনির্ধারিত টিএসসি মিলনায়তনে কাউন্সিলরদের নিয়ে কাউন্সিল অধিবেশন করি। অন্য কমিটির বিষয়ে কোনো ভাবনা নেই।
অন্য অংশের নতুন সভাপতি রাগীব নাঈম বলেন, সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশন কীভাবে শেষ হবে, সেই দায়িত্ব ছিল নির্বাচনী কমিটির উপর। মূলত সেই কমিটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। এর ফলে দুটি আলাদা কাউন্সিল অধিবেশনের মধ্য দিয়ে দুটি আলাদা কমিটি হয়েছে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]