চারদিকে ঘন সবুজ পরিবেশের মাঝে বুঁদ হয়ে থাকার নেশায় যেকোনো পর্যটকেরই পছন্দের স্থান সুন্দরবন। ভরা এই পর্যটন মৌসুমে সুন্দরবনের সৌন্দর্য দেখে অভিভূত হচ্ছেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। বছরজুড়ে সুন্দরবনে পর্যটকদের আসা-যাওয়া থাকলেও এই মুহূর্তে পর্যটকদের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন পর্যটক ব্যবসায়ীরা।
বিশ্বের সেরা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন প্রকৃতির রহস্যঘেরা। সারি সারি সুন্দরী, পশুর, কেওড়া, গেওয়া এবং গোলপাতা গাছ। দৃষ্টি যতদূর যায় সবখানেই যেন কোনো শিল্পী সবুজ অরণ্য তৈরি করে রেখেছেন। অপরূপ চিত্রল হরিণের দল, বন মোরগের ডাক, বানরের চেঁচামেচি, মৌমাছির গুঞ্জন ও বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের গর্জন। এসব বৈচিত্র্যময়তার কারণে বরাবরই বিদেশি পর্যটকদের কাছে সুন্দরবনের কদর আলাদা। গত দুই বছর করোনা থাকার কারণে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা তলানিতে নেমে এসেছিল। কিন্তু বর্তমানে সে চিত্র পাল্টে গেছে পুরোটাই।
সুন্দরবনের কিছু মনোমুগ্ধকর স্থান রয়েছে। যেখানে না গেলে আপনার সুন্দরবন যাওয়া সার্থক হবে না। যেমন হিরণ পয়েন্ট, দুবলার চর, শরণখোলা, ছালকাটা, টাইগার পয়েন্ট টাওয়ার, টাইগার পয়েন্ট সি বিচ, জামতলা সি বিচ, সাত নদীর মুখ, কালীরচর উল্লেখযোগ্য।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা আবু নাসের মোহাম্মদ মহাসীন হোসেন জানান, দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা সুন্দরবনের বেড়েছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত ২২৮ জন বিদেশি সুন্দরবন ভ্রমণ করেছেন এবং এতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। চলতি মাসে কত জন বিদেশি পর্যটক সুন্দরবন ভ্রমণ করেছেন তা মাস শেষ হলে জানা যাবে।
ব্যবসায়ীরাও জানান, সুন্দরবনের অভ্যন্তরের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোয় এখন পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। আর এ পর্যটকদের মধ্যে বড় একটি অংশ রয়েছে ভিনদেশি পর্যটক।
চলতি মৌসুমে রাসমেলার পূণ্যার্থীদেরসহ ৪০ হাজার ৭৮ জন পর্যটক সুন্দরবনে এসেছেন। এর মধ্যে পূণ্যার্থী ৭৫২৭ জন। ৪৭৭ জন বিদেশি। দেশি-বিদেশি পর্যটক মিলে রাজস্ব এসেছে মোটি ৬২ লাখ ১২ হাজার ৮৬৫ টাকা।
মোংলার দক্ষিণ চিলার বাদাবন ইকো-কটেজের পরিচালক মো. লিটন জমাদ্দার বলেন, নতুন বছরে দেশি পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা সুন্দরবনের বেড়েছে। সম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবনের ঘুরতে আসা ইতালি, ফ্রান্স, ব্রাজিল, জার্মানি, নেদারল্যান্ড বেশ কয়েকজন পর্যটক আমাদের কটেজে অবস্থান করেছিলেন। সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য উপভোগ, নিরাপত্তার সঙ্গে নিশিযাপন ও মানসম্মত খাবার খেয়ে মুগ্ধ হয়েছেন তারা।
এদিকে দেশি-বিদেশি পর্যটক বাড়ায় খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সম্ভাবনাময় পর্যটনখাতকে জাগিয়ে তুলতে পারলেই অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ অনেক শক্তিশালী হবে। উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে এ খাতে আমাদের গুরুত্ব বা নজর দিতে হবে। আর বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পারলে এ খাতে রাজস্ব অনেক বাড়বে।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]