ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খণ্ডে জৈন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ‘সমিধ শিখরজি’ ও মন্দির সংলগ্ন এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব এক টুইটবার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মন্দির ও তার আশপাশের স্থানে পর্যটকদের আগমন বন্ধ করতে ইতোমধ্যে ঝাড়খণ্ড রাজ্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ৬ জানুয়ারি টুইটবার্তায় মন্ত্রী বলেন, ‘সমিধ শিখরজিসহ ভারতে জৈন ধর্মাবলম্বীদের সকল ধর্মীয় স্থানের পবিত্রতা রক্ষায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

টিলা-পাহাড়-অরণ্যে সমৃদ্ধ ঝাড়খণ্ডে পর্যটকদের আকর্ষণ করতে গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতীয়সহ আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে প্রতিনিয়তই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এ রাজ্য।

বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন জৈন ধর্ম মূলত সন্ন্যাসী বা ঋষিভিত্তিক এবং একপ্রকার জীবনযাপন বিধান। প্রাচীন ভারতে বিভিন্ন সময়ে এই ধর্ম বিস্তারলাভ করলেও বর্তমানে এই ধর্মাবলম্বীরা ভারতের অন্যতম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। ১৩০ কোটি মানুষ অধ্যুষিত দেশটিতে বর্তমানে জৈন ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা মাত্র ১ কোটি ২০ লাখের কিছু বেশি।

সমিধ শিখরজি মন্দিরটি ঝাড়খণ্ডের পরশনাথ পাহাড়ে অবস্থিত। এটি ভারতের অন্যতম ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় জৈন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম পবিত্র স্থান। ২০১৯ সালে সমিধ শিখরজি মন্দির ও তার আশপাশের এলাকা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় পরিবেশ মন্ত্রণালয়।

কিন্তু তারপর থেকেই জৈনধর্মাবলম্বীরা অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন— পর্যটকরা মন্দির চত্বর ও আশপাশের এলাকায় মদ ও মাংস ভক্ষণ করেন— যা জৈন ধর্মে নিষিদ্ধ। এছাড়া পর্যটকদের অবাধ যাতায়াতের কারণে মন্দিরের পবিত্রতা ক্ষুন্ন হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন তারা।

শেষে গত ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ডের জৈন ধর্মাবলম্বীরা সমিধ শিখরে পর্যটকদের আগমন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। কয়েক সপ্তাহ তা চলার পর অবশেষে আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

বিবার্তা/এসবি