শিরোনাম
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিতের আহবান জাতিসংঘের
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০১৮, ১৫:৩১
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিতের আহবান জাতিসংঘের
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মিয়ানমারে নিপীড়নের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া স্থগিতের আহবান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট। মঙ্গলবার জেনেভা থেকে এক বিবৃতির মাধ্যমে তিনি এ আহবান জানান।


তিনি বলেন, রাখাইনে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হওয়ার আগে তাদের ফেরত পাঠালে এ জনগোষ্ঠীর জীবন ফের ঝুঁকিতে পড়বে। শরণার্থীদের বলপূর্বক ফেরত পাঠানো হলে তা হবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।


বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তির ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার থেকে এ প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা। দুই দেশের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথম ধাপে ২২৬০ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে। প্রতিদিন ১৫০ জন করে ১৫ দিনে প্রথম ধাপের এ প্রত্যাবাসন শেষ হবে।


বাশেলেট তার বিবৃতিতে কক্সবাজারের ক্যাম্পে থাকা দুই রোহিঙ্গার আত্মহত্যাচেষ্টার কথা জানিয়ে বলেন, আমরা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মুখে দেখছি আতঙ্ক আর ভয়। ইচ্ছার বিরুদ্ধে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তারা।


জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদন থেকে উদ্ধৃত করে মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত নমুনা। সেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটানো হয়েছে, হয়তো গণহত্যাও।


বাশেলেট বলেন, যেখানে জবাবদিহিতার লেশমাত্র নেই, যেখানে সহিংসতা এখনও থামেনি; সেই মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর অর্থ হবে-তাদের আবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের চক্রের মধ্যে ছুড়ে ফেলা। এই জনগোষ্ঠী দশকের পর দশক ধরে ওই দুর্ভোগের মধ্য দিয়েই যাচ্ছে।


বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের নিপীড়নের খবর এখনও আসছে মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনে। এর মধ্যে রয়েছে হত্যা, গুম আর গণগ্রেফতারের খবর।


বাশেলেট জানান, এক লাখ ৩০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা এখন রাখাইনে সরকারি আশ্রয় শিবিরে আছে। বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্যরেখায় আছে প্রায় পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা। এই জনগোষ্ঠী এখনও চলাফেরা ও অন্যান্য অধিকার থেকে বঞ্চিত।


নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করে তবেই রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানান জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার।


এর আগেও মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরার মত অনুকূল পরিবেশ এখনও সৃষ্টি হয়নি মন্তব্য করে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এবং মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংহি লিও প্রত্যাবাসন স্থগিত করার আহবান জানিয়েছিলেন।


আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে গত বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও নানা কারণে প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হতে থাকে।


শেষ পর্যন্ত গত ৩০ অক্টোবর ঢাকায় দুই দেশের জয়েন্টওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য মধ্য নভেম্বর সময় ঠিক হয়। সূত্র : রয়টার্স


বিবার্তা/মৌসুমী


>>রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com