মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সেদেশের রাখাইন প্রদেশে প্রত্যাবাসন আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ শহীদুল হক এ বিষয়ে বলেছেন, প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আমরা আশাবাদী। দেখা যাক কি ঘটে।
রাজধানীর একটি হোটেলে মঙ্গলবার চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বিষয়ক একটি কর্মশালায় যোগদান শেষে তিনি একথা বলেন। জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) ৩০ অক্টোবরের সিদ্ধান্ত অনুসারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার প্রত্যাবাসনের তারিখ নির্ধারণ করেছে এবং উভয় দেশ নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী কাজ করছে।
প্রাথমিকভাবে মিয়ানমার প্রথম ব্যাচে ফেরত নেয়ার জন্য ২ হাজার দু’শ রোহিঙ্গার বিষয়ে যাচাই-বাছাই করেছে এবং আগামী বৃহস্পতিবার এই প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
শহীদুল হক জানান, কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থানরত তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের তারা প্রত্যাবাসন সম্পর্কে অবগত করছেন। তারা যেতে না চায়, তাহলে আমাদের কিছু করার নাই। এক্ষেত্রে ১৫ নভেম্বরের নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন হতে পারে। আমি সব সময়ই বলি, প্রত্যাবাসন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া।
বাংলাদেশ এ পর্যন্ত দুই পর্যায়ে মিয়ানমারকে ৩২ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছে এবং সর্বশেষ জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের গত বৈঠকে ২৪ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা উপস্থাপন করেছে। অন্যদিকে মিয়ানমার জানিয়েছে তারা এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার ব্যক্তির বিষয়ে যাচাই-বাছাই করেছে।
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার সঙ্গে করা সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, এই প্রত্যাবাসন হবে স্বপ্রণোদিত আর সংস্থাটি গোটা প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে। প্রত্যাবাসনের জন্য সরকার তৈরি আর এজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, এই প্রত্যাবাসন স্থল সীমান্ত দিয়ে হবে এবং ঘুনদুম-বুথিডং সীমান্ত দিয়েই এসব রোহিঙ্গা রাখাইনে প্রবেশ করবে।
বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় ৩০টি পরিবারের ১৫০ জনকে রাখাইনে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এদের মধ্যে ১১টি রোহিঙ্গা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) মঙ্গলবার প্রতিনিধিরা কথা বলে জেনেছেন, মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন স্বেচ্ছায় রাখাইনে ফিরতে চান কী না। আজ বুধবার বাবি ১৯টি পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎকার নেয়া হবে।
প্রতিদিন যে দেড়শ’ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হবে সে অনুযায়ী, ১৫ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত একটি তালিকা মিয়ানমার সোমবার বাংলাদেশকে দিয়েছে। ওই তালিকা ধরে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ফেরার বিষয়টি যাচাই শেষে তাদের রাখাইনে পাঠানোর প্রস্তুতির কাজ করছে বাংলাদেশ।
গত ৩০ অক্টোবর বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আলোচনা করে ১৫ নভেম্বর প্রত্যাবাসনের সম্ভাব্য তারিখ হিসাবে নির্ধারণ করে। বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। রাখাইনে নির্যাতনের শিকার হয়ে নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]