
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে শ্রমিক দলের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এতে মনির হোসেন (৪৫) ও মহিদুল ইসলাম (৩৫) নামের দুইজন আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সংঘর্ষের পর দুই পক্ষই নগর ভবন ছেড়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর দাবিতে টানা ৩৯ দিন নগর ভবনে তালা দিয়ে রেখেছিলেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নেতা আরিফ চৌধুরী ও তার অনুসারীরা। এ ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়ে তালা খুলে দিতে নির্দেশ দেন ইশরাক।
পরে সোমবার (২৩ জুন) নগর ভবনের তালা খুলে দেন আরিফ চৌধুরীরা। কিন্তু প্রশাসক ও প্রকৌশল দপ্তরের কর্মকর্তাদের কক্ষগুলোতে তারা তালা লাগিয়ে রাখেন। ওই কর্মকর্তারা যাতে অফিসে ঢুকতে না পারেন সেজন্য সারাদিন নগর ভবনে মহড়া দেন আরিফ চৌধুরী। ফলে গতকাল তাদের কেউ অফিস করতে পারেননি।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকাল ৯টার পরপর নগর ভবনে অবস্থান নেন আরিফ চৌধুরী ও তাঁর অনুসারীরা। এসময় তারা ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে শপথ পড়ানো ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন। এসময় তাদের ধাওয়া করেন শ্রমিক দলের অন্য পক্ষের নেতা আরিফুজ্জামান প্রিন্সের অনুসারীরা। তখন তাদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে নগর ভবন থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান আরিফ চৌধুরী। এসময় তার সঙ্গে ইশরাক সমর্থক বহিরাগত ব্যক্তিরাও ছিলেন।
ডিএসসিসির শ্রমিকদলের নেতারা জানান, আগে শ্রমিকদলের দুটি পক্ষই বিএনপি নেতা ইশরাকের অনুসারী ছিলেন। কিন্তু ইশরাকের শপথ কেন্দ্র করে আরিফুজ্জামান প্রিন্স দূরে থাকেন। তিনি নগর ভবনে তালা দিয়ে নাগরিকদের ভোগান্তির বিরোধিতা করেন। এছাড়া নগর ভবনে শ্রমিক দলের দুই পক্ষের দুটি কমিটি রয়েছে। এর মধ্যে আরিফুজ্জামান প্রিন্সের কমিটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর রয়েছে। তিনি এ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এবং নগর ভবনের কেয়ারটেকার। কিন্তু আরিফ চৌধুরী যে সংগঠনের সভাপতি তার কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই।
জানতে চাইলে আরিফুজ্জামান প্রিন্স বলেন, ‘ইশরাক হোসেন নগর ভবন চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন। তার এই ঘোষণার পরও সোমবার বহিরাগত কিছু লোক প্রতিদিন নগর ভবনে মহড়া দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হয়রানি করেন। আজ (মঙ্গলবার) আমরা যখন অফিসে যাই তখন আমাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের স্লোগান দেওয়া হয়। তখন বাগবিতণ্ডার পর তারা আমাদের ওপর হামলা করা হয়। পরে করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া দিয়ে নগর ভবন থেকে বের করে দেন।’
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আরিফ চৌধুরী। তিনি জানান, আজ তারা নগর ভবনে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছিলেন। কিন্তু বহিরাগতরা নগর ভবনে এসে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদের পাঁচজনকে গুরুতর আহত করেছে।
এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের চলমান পরিস্থিতি, সেবা কার্যক্রম এবং ঢাকাবাসীর আন্দোলন নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নগর ভবনে সংঘর্ষের ঘটনার পর তিনি সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করেছেন।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]