আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে এখনো কোনো ধরনের নাশকতার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি এবং যেকোনো অপতৎপরতা রুখে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন র‍্যাবের আইন গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী।

মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, ঈদ-উল-আজহাকে কেন্দ্র করে পশুর হাট, কোরবানী, ঈদের জামায়াত, চামড়া বেচা-কেনাসহ বেশ কিছু কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এক্ষেত্রে যে কোন ধরণের অপতৎপরতা রুখতে সচেষ্ট রয়েছে র‌্যাব।

কোরবানীর হাটে পশু কেনা-বেচায় প্রচুর আর্থিক লেনদেন হয়। এক্ষেত্রে অসাধু চক্রের মাধ্যমে জাল টাকার ছড়াছড়ির আশংকা থাকে। জাল টাকা তৈরি ও সরবরাহের সঙ্গে জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে।

তিনি বলেন, হাটগুলোতে জাল টাকা সনাক্তে হাটে স্থাপিত র‌্যাব ফোর্সেস এর কন্ট্রোল রুমে জাল নোট সনাক্তের মেশিন স্থাপন করে সহায়তা করছে। সবাইকে র‌্যাবের এই সেবা গ্রহণ করতে অনুরোধ করা হলো। এছাড়াও এ সময়ে কোরবানির হাট কেন্দ্রিক ও মার্কেটে চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, প্রতারক চক্র, দালাল, মলম পার্টি এবং অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এসব অনাকাঙ্খিত ঘটনা রুখতে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।

র‍্যাবে সদ্য যোগদান করা এই পরিচালক বলেন, অসুস্থ গবাদি পশু, কৃত্রিম উপায়ে রাসায়নিক দ্রব্য অথবা ইনজেকশন ব্যবহার করে দ্রুত সময়ে মোটাতাজা করা ও অস্বাস্থ্যকর গবাদি পশু শনাক্তকরণে র‌্যাবের নজদারি চলমান থাকবে। পাশাপাশি পশু চিকিৎসকের সহায়তায় এসকল গবাদি পশু শনাক্ত করে বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

তিনি আরও বলেন, নির্ধারিত হারের বেশি হাসিল নেয়া প্রতিরোধে র‌্যাবের নজরদারি থাকবে। কেউ নির্ধারিত হারের বেশি হাসিল আদায় করলে বা করতে চাইলে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ থাকলে র‌্যাব কন্ট্রোল রুমের সহায়তা গ্রহণের জন্য সকলকে অনুরোধ করা যাচ্ছে। এছাড়াও এক হাটের গরু জোর করে অন্য হাটে নামানোসহ পশুর হাট কেন্দ্রিক বিভিন্ন ধরণের চাঁদাবাজি ঠেকাতে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।"

ঢাকামুখী পশু বহণে চাঁদাবাজি রুখতে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও নিয়মিত টহল বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, সড়কপথে নিরাপত্তা বিধানে র‌্যাবের টহল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে । এ বছর অনলাইনে প্রচুর কোরবানীর পশু কেনা-বেচা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অনিয়ম ও প্রতারণা প্রতিরোধে র‌্যাব সাইবার মনিটরিং সেল সার্বক্ষণিক ভার্চুয়াল জগতে নজরদারী করছে। অনলাইনে পশু কেনা বেচার লেনদেনের ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বনের জন্য র‌্যাব ফোর্সেস সকল পরামর্শ দিচ্ছে।

এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ থাকলে র‌্যাব কন্ট্রোল রুমে অভিযোগ করা জন্য অনুরোধ করা হলো। কোরবানির পশুর চামড়ার বাজার ধস নামাতে মুনাফালোভী সিন্ডিকেটের কারসাজির বিরুদ্ধে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারী রয়েছে। তাদের এই অপতৎপরতার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইভটিজারদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি জানিয়ে তিনি বলেন, কোরবানির পশুর হাটে আসা নারীদের উত্যক্ত বা ইভটিজিং হয়রানি রোধে মোবাইলকোর্টসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ কোন ধরণের হেনস্থার শিকার হলে অবশ্যই র‌্যাব কন্ট্রোল রুম ও র‌্যাব টহল দলকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।

পশুর হাট বা তৎসংলগ্ন এলাকায় র‌্যাবের নিয়মিত টহলের পাশাপাশি যে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা রোধে আশে পাশের এলাকায় র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং সাদা পোশাকে বিভিন্ন জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। যে কোন জরুরি প্রয়োজনে পশু ব্যবসায়ীসহ দেশের সকল জনগণকে র‌্যাবের কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছে র‍্যাব।

শীর্ষ সন্ত্রাসী নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের চলমান অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যেকোনো অপতৎপরতা রুখে দেওয়া হবে। বিষয়টি অবগত আছি। আমরা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছি। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। এই অভিযানে কোনো সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিবার্তা/এমবি