টোল প্লাজায় ৬ জন নিহতের ঘটনায় বাস চালকসহ গ্রেফতার ২
প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:৫৬
টোল প্লাজায় ৬ জন নিহতের ঘটনায় বাস চালকসহ গ্রেফতার ২
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বাস চাপায় ৬ জন নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত বাসচালক নুরুন্নবীসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি আ. ক. ম আক্তারুজ্জামান বসু মিয়া।


তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, আপাতত ধারণা করা হচ্ছে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণহীন ছিল। তবে আরও কোনো কারণ আছে কিনা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।


এর আগে শুক্রবার বেলা ১১টায় ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় টোল পরিশোধের সময় একটি প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলে বাসা চাপা দেয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ।


জানা যায়, ঢাকার জুরাইন থেকে প্রাইভেটকারে চালকসহ ৮ জন গোপালগঞ্জে যাচ্ছিলেন। অপরদিকে মোটরসাইকেলে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ফরিদপুরে যাচ্ছিলেন তিনজন। বেলা ১১টায় ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় টোল দেওয়ার জন্য মোটরসাইকেলটি থামানো হয়। এর পেছনে সিরিয়ালে ছিল একটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেটকার। আচমকা বেপারী পরিবহণের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকারের পেছনে সজোরে ধাক্কা দিয়ে সামনে এগিয়ে যায়। বাস, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস গিয়ে পড়ে মোটরসাইকেলের ওপর। এতে মাইক্রোবাসের কেউ হতাহত না হলেও প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের সবাই হতাহত হন। এরমধ্যে প্রাইভেটকারে থাকা এক শিশুসহ একই পরিবারের ৪ জন এবং মোটরসাইকেলে থাকা এক শিশু ও তার মা নিহত হয়েছেন।


স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রাইভেটকারে ছিলেন গাড়ির মালিক নুর আলম (২৮), তার স্ত্রী অনামিকা (২৫), ছেলে আয়াজ, শাশুড়ি আমেনা, দুই শ্যালিকা ইমি (২২) ও নিহা (১০), চালক হাবিবুর রহমান (৩১) ও এক আত্মীয় ফাহমিদা আক্তার নাদিয়া (১৭)। এদের মধ্যে আয়াজ, আমেনা, ইমি ও নিহা নিহত হয়েছেন। বাকিদের গুরুতর আহত অবস্থায় মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


নুর আলমের বড় ভাই নুর আহম্মেদ জানান, প্রাইভেটকারের সবাই ঢাকার জুরাইনের বাসিন্দা। ৪ দিন আগে গোপালগঞ্জে এক আত্মীয় মারা যান। সেই শোকের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে শুক্রবার সকালে সবাইকে নিয়ে নিজের প্রাইভেটকারে রওয়ানা দিয়েছিল নুর আলম।


এদিকে মোটরসাইকেলে ছিলেন ঢাকার হাতিরঝিল এলাকার বাসিন্দা সুমন (২৮), স্ত্রী রেশমা আক্তার (২৪) ও তাদের ৭ বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ। দুর্ঘটনায় আব্দুল্লাহ ঘটনাস্থলে ও পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রেশমা মারা যান।


সুমনের শ্বশুর আ. মালেক বলেন, আমাদের বাড়ি ফরিদপুর। আজকে আমার ছোট মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বড় মেয়ে রেশমা, তার স্বামী ও নাতি মোটরসাইকেলে ঢাকা থেকে ফরিদপুরে আসছিল। পরে খবর পাই সড়ক দুর্ঘটনায় মেয়ে ও নাতি মারা গেছে।


ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের হাসাড়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আ. রহমান বলেন, দুর্ঘটনার ভিডিও পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, বাসটি ব্রেক ফেল করেছিল। তিনি জানান, দুর্ঘটনার পরপর সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার তৎপরতা চালান। স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসক ৬ জনকে মৃত ঘোষণা করেন।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com