
দেশের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় কারফিউ শিথিলের সময় আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামীকাল বুধবার (৩১ জুলাই) সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৩ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
৩০ জুলাই, মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় সচিবালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতা চরম আকার ধারণ করায় সন্ধ্যা আইন বা কারফিউ জারি করা হয়েছিল। দেশের পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে আসায় তা শিথিলের সময়ও বাড়ানো হচ্ছে। আগামী চারদিন অর্থাৎ বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অর্থাৎ ১৩ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে। এ চারদিন রাত ৮টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত চলমান কারফিউ বলবৎ থাকবে।
কারফিউ শিথিলের এ সিদ্ধান্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদী জেলায় কার্যকর হবে। অন্য জেলাগুলোতে স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ১৫০ মারা গেছেন এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ আছে, শিক্ষার্থী আছে, সাধারণ মানুষও রয়েছে। কোনো নিরাপদ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। যারা অপরাধ করেছে তারা সবাই রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ করেছে।
তিনি বলেন, অনেকেই বলছেন আমরা গণগ্রেফতার করছি। কোনো গণগ্রেফতার আমরা করছি না। এমন কোন জেলা নাই যেখানে ধ্বংস না করলেও তারা নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছেন। আর ধ্বংসের জায়গাগুলো আপনারা সবাই দেখেছেন। আমাদের জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করেছেন। তারা প্রাণহানি ঘটিয়েছে। আমরা সবকিছুর নিন্দা জানাই।
মন্ত্রী বলেন, আমরা কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করছি না। গোয়েন্দা তথ্য, ভিডিও ফুটেজ, সাক্ষী সাবুদ নিয়ে যাদের আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি, তাদেরই গ্রেফতার করছি। ভুলক্রমে যদি কেউ নিয়ে আসে থানায় আমাদের অফিসাররা তাদের চেক করে যদি মনে করেন তিনি নিরপরাধ তাকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, গণগ্রেফতার হচ্ছে না। হ্যাঁ, গ্রেফতার আমরা করেছি। কারণ ধ্বংসের কাণ্ড আপনারা যাত্রাবাড়ীতে দেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, যারা এই কর্মকাণ্ড করেছেন তারা রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ড করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে যে ধরনের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা, সেই ব্যবস্থা অবশ্যই হবে। আমরা কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে অন্তরীণ করব না।
এর আগে আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে সাত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক চলে টানা সোয়া তিন ঘণ্টা, বিকেল ৬টা ৩৫ মিনিটে বৈঠক শেষ হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিব/ সিনিয়র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, র্যাবের মহাপরিচালকসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি ছিলেন না বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]