
কোটা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতা ঠেকাতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) হেলিকপ্টার থেকে কোনো গুলি করেনি বলে দাবি করে সংস্থাটির মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি মো. হারুন অর রশিদ বলেন, এগুলো প্রপাগান্ডা। আমরা নিজেরাও ভিডিও করেছি। হেলিকপ্টার থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ও গ্যাস শেল ফায়ার করা হয়েছে। কোনো গুলি করা হয়নি।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
র্যাব ডিজি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংসতায় পরিণত হয়, শুরু হয় ধ্বংসযজ্ঞ। এর ভয়াবহতা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানায়। পুলিশ ও তাদের স্থাপনাকে টার্গেট করা হয়। উত্তরা পূর্ব থানার সামনে এক র্যাব কনস্টেবলকে নির্মম-নিষ্ঠুরভাবে রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়া হয়। তিনি সিএমএইচে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আমাদের গাড়িও সেখানে পুড়িয়ে দেয়া হয়। কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির ছাদে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা আশ্রয় নেন। আমরা তাদের হেলিকপ্টার দিয়ে সেখান থেকে উদ্ধার করি।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের শিমরাইলে হাইওয়ে পুলিশের অফিসে আগুন দেয়া হয়। আমরা সেখান থেকেও পুলিশ সদস্যদের হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধার করি। দুর্বৃত্তদের আগুনে দুজন শ্রমিক সেখানে পুড়ে অঙ্গার হয়েছেন। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আগুন দেয়া হয়েছে। সেতু ভবনের ৫০টিরও বেশি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে দুর্বৃত্তরা আন্দোলনের নামে রাস্তা বন্ধ করে ছোট ছোট বাচ্চাদের সামনে বসিয়ে দিয়েছিল। ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে সরকার ও দেশকে অকার্যকর করে দিতে চেয়েছিল তারা। যখন আমরা রাস্তা ব্যবহার করতে পারছিলাম না, তখন হেলিকপ্টার ব্যবহার করে কাজ করেছি। আমরা চেষ্টা করেছি মানুষের জীবন যাতে বাঁচানো যায় এবং ক্ষতিটা কমানো যায়।
হেলিকপ্টার না থাকলে র্যাব কীভাবে অভিযান পরিচালনা করতো- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের হামলা এবারই প্রথম নয়। এর আগে অনেক সহিংসতা-নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। আমরা সেগুলো হেলিকপ্টার ছাড়াই মোকাবিলা করেছি। ছাত্ররা যখন আন্দোলন করছিল, তখন কোনো সহিংসতা ছিল না। ছাত্ররা আমাদের প্রতিপক্ষ নয়। সাধারণ মানুষও আমাদের প্রতিপক্ষ নয়। আমরা তাদেরই প্রতিপক্ষ, যারা হামলা করেছে; দেশ ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে। সাধারণ মানুষ ও ছাত্ররা আমাদের সঙ্গে রয়েছে। আদালতের সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর তারা আর কোনো আন্দোলন করেনি। স্বাধীনতা বিরোধীরা সবসময়ই সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।
র্যাব সতর্ক ছিল কি না, সতর্ক থাকলে নিয়ন্ত্রণ করতে এত সময় কেন লেগেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশিদ বলেন, ১৯ জুলাই থেকে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর খুব দ্রুতই সিচুয়েশন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আমরা জাতিসংঘ মিশনেও দেখেছি এত দ্রুত করা হয় না। সময় নেয়া হয়।
ছাত্রদের মধ্যে অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে আন্দোলনকে সহিংসতায় রূপ দেবে, এ তথ্য র্যাব আগে থেকে জানতে পারেনি? এক্ষেত্রে ইন্টেলিজেন্স (গোয়েন্দা) ব্যর্থতা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সেটি বলছি না। পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টেছে। সন্ত্রাসী, জঙ্গি, হামলাকারীরা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। সুযোগ পেলেই হামলা, নাশকতা করে। যারা নাশকতার সঙ্গে জড়িত, তাদের আমরা ধরব। বিভিন্ন জায়গায় যারা নাশকতা করেছে, তাদেরও গ্রেফতার করা হবে। আমাদের গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক অনেক শক্তিশালী ও সুবিস্তৃত। প্রত্যেককে শনাক্ত করা হবে। আইনের আওতায় আনা হবে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]