
উচ্চবংশীয় ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার স্বজনদের এনআইডি-পাসপোর্টের তথ্য চেয়ে নির্বাচন কমিশন এবং পাসপোর্ট অধিদফতরে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
৯ জুলাই, মঙ্গলবার দুদক জানায়, প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে মতিউর রহমান, তার দুই স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানদের নাম উল্লেখ করে পৃথক পৃথক চিঠি দেয়া হয়েছে।
এরআগে, গত ২ জুলাই মতিউর, তার দুই স্ত্রী ও ২ সন্তানের সম্পদের বিবরণ জমা দিতে নোটিশ দিয়েছিল। এর আগে ৩০ জুন মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা সম্পদের খোঁজে সরকারি বিভিন্ন দফতরে নথিপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছিল দুদক।
এদিকে দুদক আরো জানিয়েছে ছাগলকাণ্ড নিয়ে হট্টগোলের মধ্যেই ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা সরিয়েছেন মতিউর রহমান। ১১৫টি ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সেখানে মাত্র ৪ কোটি টাকা রয়েছে। আর ৮ কেটি টাকা তুলে নেন মতিউর।
দুদক আইনজীবী খুরশিদ আলম জানান, মতিউরের দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো তথ্য নেই। ব্যাংক থেকে টাকা সরানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সংস্থাটির আইনজীবী বলছেন, টাকা যেখানেই সরানো হক খুঁজে বের করা অসম্ভব নয়।
জানা যায়, মতিউরের বিরুদ্ধে এর আগে চারবার দুর্নীতির অভিযোগ পায় দুদক। কিন্তু প্রতিবারই নানা কৌশলে নানা প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ক্লিন শিট পেয়েছিলেন তিনি।
মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম দুদকে অভিযোগ আসে ২০০৪ সালে। সে সময় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচারের। অভিযোগ আছে, হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা টাকা প্রবাসী কোনো এক আত্মীয়র মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে তা রেমিট্যান্স বাবদ দেখিয়ে দিয়েছিলেন ট্যাক্স ফাইলে।
২০০৮ সালে আবারও দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে তার বিরুদ্ধে। এবার অভিযোগ বিলাসবহুল পণ্যের শুল্ক মাফ করিয়ে দেয়ার মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন। কিন্তু তদন্ত শুরু হতে না হতেই প্রভাবশালীদের চাপে তা চাপা পড়ে যায়, ক্লিন শিট পান মতিউর। এরপর ২০১৩ ও ২০২১ সালে আরও দুবার দুদকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়। অভিযোগ ছিল অবৈধ সম্পদ ও সম্পত্তির। কিন্তু কৌশলী মতিউর অবৈধ সম্পদকে পারিবারিক ব্যবসা ও ঋণ দেখিয়ে প্রস্তুত করেন ট্যাক্স ফাইল। ফলে আবারও ক্লিনচিট।
তবে পঞ্চমবারের মতো তদন্তে নেমে দুদক আগের চারবারের প্রতিটি বিষয়ে পর্যালোচনার আশ্বাস দিয়েছে। একইসঙ্গে যে বা যাদের মাধ্যমে বারবার দায়মুক্তি পেয়েছে মতিউর, তা-ও খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানায় দুদক।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]