২০২৩ অর্থবছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার হবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ দেখিয়ে ছিল বিশ্বব্যাংক। তবে সংস্থাটি জানায় এ বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক শতাংশ হবে।
২ এপ্রিল, মঙ্গলবার বিশ্বব্যাকের ঢাকা অফিস বাংলাদেশের অর্থনৈতিক আপডেট প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক, সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ রনজিত ঘোষ, বার্নাড হ্যাভেন।
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হতে পারে।
সেক আরো জানান, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, সুদহার বৃদ্ধি, মুদ্রার বিনিময় হার, আর্থিক খাতে সংস্কার তথা বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি তুলে নেয়াসহ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ।
আশাপ্রকাশ করে তিনি বলেন, ২০২৬ সাল নাগাদ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে কোন বাধা দেখছে না বিশ্বব্যাংক।
আবদৌলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অর্থনীতির অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী দিনেও উচ্চ মূল্যস্ফীতির ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, চলতি বছরে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে গড় প্রবৃদ্ধি হবে ৬ শতাংশ। সেই হিসেবে প্রবৃদ্ধি কমেছে। এই সময়ে প্রবৃদ্ধি বেশি অর্জন করবে ভারত, ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। সব থেকে কম প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে পাকিস্তান মাত্র ১ দশমিক ৮ শতাংশ।
সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি কভিড-১৯ মহামারী থেকে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে। কিন্তু মহামারীপরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধার উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ক্রমাগত ব্যালেন্স অব পেমেন্টের ঘাটতি, আর্থিক খাতের দুর্বলতা এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে ব্যাহত হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে দেশের অর্থনীতির সংস্কার খুব জরুরি। পাশাপাশি বিদেশি মুদ্রার একক বিনিময় হার চালু হলে দেশে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে। একক বিনিময় হারে মুদ্রাস্ফীতিও আরও কমবে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটি বলছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে বাংলাদেশের সাধারণ ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। যার ফলে বিনিয়োগে তারল্য সংকুচিত হয়েছে। ক্রমবর্ধমান সুদের হার, আমদানি বিধিনিষেধ এবং জ্বালানির দামের ঊর্ধ্বমুখী সংশোধনের ফলে খরচ বৃদ্ধির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরও হ্রাস পেয়েছে।
বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের সংস্কারের পরামর্শ দিয়ে বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশে ব্যাংক খাতে সংস্কার জরুরি। তবে ব্যাংক মার্জারের (একীভূতকরণ) ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক থাকতে হবে।
এছাড়া চলতি অর্থবছর দেশে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে গেছে, ফলে বিনিয়োগের দরজা কিছুটা সংকুচিত। খেলাপি ঋণ এখনও অনেক বেশি। রিপোর্টিং মান, সহনশীলতা ব্যবস্থা এবং দুর্বল নিয়ন্ত্রক প্রয়োগের কারণে ব্যাংকিং সেক্টরের পরিস্থিতি আরো চাপে রয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, বিনিময় হারের নমনীয়তা তৈরি হলে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। কাঠামোগত সংস্কারগুলো অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করতে এবং মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করতে চাবিকাঠি হবে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]