
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ৮৫০ মিলিয়ন (৮৫ কোটি) ডলারের সহায়তা চেয়েছে জাতিসংঘ।
বুধবার (১৩ মার্চ) বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্বে রোহিঙ্গা মানবিক সংকটের জন্য ২০২৪ সালের কার্যক্রমের যৌথ পরিকল্পনা (জেআরপি) ঘোষণা করা হয়ে।
যৌথ পরিকল্পনায় রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারী স্থানীয় জনগণ মিলিয়ে মোট ১৩.৫ লাখ মানুষের সহায়তায় ৮৫২.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আবেদন জানানো হয়েছে।
এদিন জেনেভায় দাতাদের সামনে কর্ম-পরিকল্পনা ও আনুষঙ্গিক আর্থিক চাহিদা তুলে ধরেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এবং জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক এমি পোপ।
সেখানে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে প্রায় ৯৫ শতাংশ রোহিঙ্গা শরণার্থী মানবিক সাহায্যের ওপর নির্ভর করে।
এক বিবৃতিতে তারা জানায়, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের মুখে বাংলাদেশের সাথে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একাত্মবোধ এবং শরণার্থীদের সুরক্ষা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে।
গত বছরও জাতিসংঘ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৮৭৬ মিলিয়ন ডলার চেয়েছিল, যার মধ্যে কেবল ৪৪০ মিলিয়ন ডলার তারা যোগাড় করতে পেরেছিল।
ইউএনএইচসিআর জানায়, রোহিঙ্গা সংকট এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু নয়। এমতাবস্থায় শরণার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংকটের ফলাফল হবে খুবই সুদূরপ্রসারী। অধিকাংশ শরণার্থী তাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে, এবং সহায়তা কার্যক্রম চলমান রাখা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। অনেক শরণার্থী তাদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে সংগ্রাম করছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, শরনার্থীদের ৭৫ শতাংশেরও বেশি হচ্ছে নারী ও শিশু, যারা নির্যাতন, বঞ্চনা ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার হুমকির মুখে রয়েছে। শরণার্থীদের অর্ধেকেরও বেশির বয়স ১৮ এর নিচে, যারা শিক্ষা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও জীবিকার সীমাবদ্ধতায় ভুগছে। সহায়তার অর্থ রোহিঙ্গাদের খাদ্য, চিকিৎসা, আবাসন, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় করা হবে।
অনেক রোহিঙ্গাই ক্যাম্পের জীবনে অতিষ্ঠ হয়ে উন্নত জীবনের লক্ষ্যে ঝুঁকিপূর্ণ নৌকায় করে সাগর পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করেছে। এদিকে, রোহিঙ্গাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াও স্থবির হয়ে আছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের প্রধান ভলকার তুর্কের মতে, মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণে ব্যর্থ হয়েছে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]