দেশে ঝুঁকিপূর্ণ ৫ সেক্টরে শ্রমজীবী শিশু ৩৮ হাজার: বিবিএস
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৪, ১৬:২৬
দেশে ঝুঁকিপূর্ণ ৫ সেক্টরে শ্রমজীবী শিশু ৩৮ হাজার: বিবিএস
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

দেশে ঝুঁকিপূর্ণ ৫টি সেক্টরে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী মোট ৩৮ হাজার ৮ জন শ্রমজীবী শিশু রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব সেক্টরগুলোতে কর্মরত সকল শ্রমজীবী শিশুদের মধ্যে ৯৭.৬ শতাংশ ছেলে এবং ২.৪ শতাংশ মেয়ে শিশু রয়েছে।


১৪ মার্চ, বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ব্যুরোর অডিটোরিয়ামে 'জাতীয় শিশুশ্রম ২০২২' এর প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।


বিবিএস এর জরিপ থেকে জানা যায়, পাঁচটি সেক্টরের মোট শ্রমজীবী শিশুদের মধ্যে শুঁটকি মাছ উৎপাদনে রয়েছে ৮৯৮ জন, চামড়াজাত পাদুকা শিল্পে রয়েছে ৫ হাজার ২৮১ জন, ওয়েল্ডিং কাজ বা গ্যাস বার্নার মেকানিকের কাজে ৪ হাজার ৯৯ জন, অটোমোবাইল ওয়ার্কশপে রয়েছে ২৪ হাজার ৯২৩ জন, অনানুষ্ঠানিক স্থানীয় টেইলারিং এবং পোশাক খাতে ২ হাজার ৮০৫ জন শ্রমজীবী শিশু রয়েছে। শ্রমজীবী শিশুদের মধ্যে অটোমোবাইল ওয়ার্কশপে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিশু নিযুক্ত রয়েছে।


অঞ্চলভিত্তিক বিভাজনে দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ সেক্টরে কর্মরত শ্রমজীবী শিশুদের মধ্যে পল্লীতে বাস করে ৩৫.৭ শতাংশ। অপরদিকে, শহরে বাস করে ৬৪.৩ শতাংশ। ফলে এই সেক্টরগুলোর বেশিরভাগ শ্রমজীবী শিশুই শহরে কাজ করে তা এ জরিপের মাধ্যমে ওঠে এসেছে।


ঝুঁকিপূর্ণ কাজ যেমন ভারী বোঝা বহন করার কাজে ছেলে শ্রমজীবী শিশু কিছুটা বেশি পাওয়া যায় যা ১৯.১ শতাংশ। কিছু শিশু আগুন, গরম যন্ত্রপাতি বা বিপজ্জনক বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এর সংস্পর্শে আসে যা ২০.২ শতাংশ, ধুলো-বালি, ধোঁয়া বা ধোঁয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাস বাধাপ্রাপ্ত হয় এমন কাজে কর্মরত রয়েছে ৩১.১ শতাংশ শ্রমজীবী শিশু। বিরতি ব্যতীত দীর্ঘ সময় ধরে রোদে কাজ করে ১৪.৮ শতাংশ এবং অল্প সংখ্যক শ্রমজীবী শিশু (৩.৯ শতাংশ) কীটনাশক এবং অন্যান্য রাসায়নিকের সংস্পর্শে এসে কাজ করছে।


এই পাঁচটি সেক্টরে গড়ে শিশুরা প্রতিদিন ৯.৪ ঘণ্টা কাজ করে। শিশুরা যে-সব প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা সুরক্ষা পদ্ধতি মেনে চলে না। শ্রমজীবী শিশুদের মধ্যে অর্ধেকেরও কম তাদের স্ব-স্ব কর্মস্থল থেকে বিনামূল্যে খাবার পায়।


জরিপের তথ্যে দেখা যায়, ৫১.৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান শ্রমজীবী শিশুদের মাসিক ৫ হাজার টাকা বা তার কম বেতন দেয়। ২৮.৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ১০ হাজার টাকা বা তার কম মজুরি প্রদান করে এবং মাত্র ১.৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান উচ্চ বেতন বা মজুরি দেয়। এই শ্রমজীবী শিশুদের বেশিরভাগই (৮৮.৪ শতাংশ) সপ্তাহ শেষে ছুটি উপভোগ করে এবং উৎসবের সময় ছুটি পায়।


পরিশেষে এই জরিপটি টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)-এর লক্ষ্য-৮ 'শোভন কাজ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি' বিশেষ করে সূচক ৮.৭.১ এর চাহিদা পূরণে তথ্য উপাত্ত সরবরাহ করে।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুউমো পোওটেনেন, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জরিপের ফোকাল পয়েন্ট মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন খাঁন।


বিবার্তা/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com