বান্দরবানের রুমা উপজেলার কেওক্রাডং-দার্জিলিংপাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় পর্যটকবাহী জিপ পাহাড়ের খাদে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীসহ দুই নারী পর্যটক নিহত হয়েছেন। গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ৫০০ মিটার পাহাড়ি খাদে পড়ে যায়। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।

২০ জানুয়ারি, শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় রুমা-কেওক্রাডং সড়কের চিং‌ড়ি ঝি‌রি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। হতাহতরা সবাই নারী। ‘ভ্রমণকন্যা’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে তাঁরা কেওক্রাডং ভ্রমণে গিয়েছিলেন।

গাড়িতে পর্যটক ছিলেন মোট ১৩ জন। দুজন ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। নিহত দুজনের মধ্যে একজনের নাম জয়নব খাতুন, যিনি এই ট্যুরের হোস্ট ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের ছাত্রী এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। জয়নব রৌমারী উপজেলা সদরের মণ্ডলপাড়ার আবদুল জলিলের কনিষ্ঠ কন্যা।

নিহত অপর নারীর নাম ফিরোজা বেগম (৫৩)। তিনি ‘ভ্রমণ কন্যা’ গ্রুপের কোর মেম্বার নুসরাত জাহান রিজভীর মা। ফিরোজা বেগম ভ্রমণকন্যা’র 'মা' হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

আহতরা হলেন রাফান (১২), উষসী নাগ (১৫), জবা রায় নাগ (৪৫), মাহফুজা ইসলাম (৪৫), আমেনা বেগম (৬০), তাহমিনা তানজিম তালুকদার (১৯), তাননিম, রিজভী (৩৪), আঞ্জুমান হক (৩৫), ইতু (১৬) ও স্বর্ণা (২৩)।

আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

হতাহতদের সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার করে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেছেন। গাড়ির চালক পলাতক রয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে পর্যটক গাইড মুনথাং বম বলেন, দলটি ক্রেওক্রাডং দেখে ফিরছিলেন। এ সময় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে উল্টে যায়। হতাহতদের প্রথমে স্থানীয় লোকজন ও সঙ্গে থাকা পর্যটকেরা উদ্ধারের চেষ্টা করেন।

বান্দরবান জিপ-মাইক্রো বাস মালিক সমিতির লাইনম্যান ফখরুল ইসলাম বলেন, গতকাল ৫৭ জনের একটি পর্যটক দল বান্দরবান জিপ-মাইক্রোবাস জিপ স্টেশন থেকে ৫টি পর্যটকবাহী গাড়ি কেওক্রাডং ভ্রমণে গিয়ে ফেরার পথে আজ রুমা-কেওক্রাডং সড়কের রুমসংপাড়া ও দার্জিলিংপাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত ও ১০ জন গুরুতর আহত হন। এই ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) মো. আবদুল্লাহ আল হাছান জানিয়েছেন, দুজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সের সহযোগিতায় বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ‘নারীর চোখে বিশ্ব দেখো’ এই প্রতিপাদ্যকে পাথেয় করে ‘ভ্রমণকন্যা’ গ্রুপ তাদের ২০১৭ সালে ভ্রমণ পিপাসু নারীদের নিয়ে যাত্রা শুরু করে।

বিবার্তা/এমজে