দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে: রাষ্ট্রপতি
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১:৫৭
দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে: রাষ্ট্রপতি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বিচারপ্রার্থীরা যাতে দ্রুত ন্যায় বিচার পায়, সে লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন।


১৮ ডিসেম্বর, সোমবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস উপলক্ষ্যে আদালতের ইনার কোর্ট ইয়ার্ডে এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান ।


এছাড়া রাষ্ট্রপ্রধান মামলা নিষ্পত্তির পর রায়ের কপির জন্যও যাতে বিচারালয়ের বারান্দায় ঘুরতে না হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে যত্নবান হওয়ার ও পরামর্শ দেন।


রাষ্ট্রপতি বিচারিক কর্মকাণ্ডে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার মামলা নিষ্পত্তিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে উল্লেখ করে বলেন, আমি আশা করব, এখন থেকে ‘জাষ্টিস ডিলেইড, জাষ্টিস ডিনায়েড’ প্রবাদটি আমাদের বিচার বিভাগে উদাহরণ হিসেবে আর ব্যবহৃত হবে না।


তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে ও জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণের মাধ্যমে ত্রিশ লাখ শহিদের রক্তে লেখা সংবিধানের যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করবেন।


তিনি মনে করেন, অমর শহিদের রক্তে লেখা এই সংবিধান রাষ্ট্র পরিচালনা ও বাঙ্গালির অধিকার আদায়ের যেমন অনন্য দলিল, তেমনি বিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায়ও অনুপ্রেরণার উৎস হিসাবে মুক্তির পথ দেখাবে।


আইনজীবীগণ বিচার ব্যবস্থার একটি অপরিহার্য অংশ উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক এই আইনজীবী বলেন, আইনজীবীদের সহায়তা ছাড়া বিচারের কাজ কিছুতেই অগ্রসর হতে পারে না। বিচার কাজে বেঞ্চ ও বারের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা খুবই জরুরি। আইন, নির্বাহী ও বিচার- রাষ্ট্রের এই তিন অঙ্গের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা রাষ্ট্র পরিচালনায় খুবই অপরিহার্য বলেও তিনি উল্লেখ করেন।


দায়রা জজ হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত, মোঃ সাহাবুদ্দিন, তাঁর আইন পেশার কিছু স্মৃতিচারণের পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপটও তুলে ধরে বলেন, সুপ্রিম কোর্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষের শেষ আশ্রয়, যেখানে তারা ন্যায় বিচার ও অধিকার রক্ষার জন্য মুখাপেক্ষী হন। দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের ভরসার এবং জাতির গৌরবের প্রতীক হলো সুপ্রিম কোর্ট। তিনি বলেন, সুপ্রীম কোর্ট সংবিধানের রক্ষক এবং চূড়ান্ত ব্যাখ্যা প্রদানকারী। সুপ্রীম কোর্টের রয়েছে জুডিসিয়াল রিভিউ’র ক্ষমতা। কিন্তু এই গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে।


রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বিজয়ের এক বছরের মধ্যেই জাতিকে তিনি উপহার দিয়েছিলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি সংবিধান, যেটা বিশ্ব গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি বিরল ও অবিস্মরণীয় ঘটনা।


রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট তার যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানবাধিকার রক্ষা, ন্যায়বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি শান্তি ও সঙ্কটে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট সংবিধানের অভিভাবক ও রক্ষক হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক যে কোনো আইন বাতিলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট সবসময় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।


বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবুদ্দিন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি দেশে সামরিক শাসন জারি করে, সংবিধানকে নানাভাবে কাটাছেড়া করে গণতন্ত্রকে চিরতরে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জনতার প্রতিরোধের মুখে স্বৈরশাসকদের পতন হয়েছে।


রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ধর্ম-বর্ণ ও ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে কেউ যাতে ন্যায় বিচার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত না হয়, সে লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন এবং তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও, দেশের বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নে অবকাঠামোসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।


অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির এবং বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট জাজেস কমিটির সভাপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বক্তব্য রাখেন।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com